অবহেলিত পাগলা থানাবাসী, প্রয়োজন স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন। করোনা ইউনিট চালুর দাবী সাধারন মানুষের।
আসাদুল ইসলাম (আশিক) ময়মনসিংহ প্রতিনিধি-ঃ
অবহেলিত পাগলা থানাবাসী, প্রয়োজন স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন। করোনা ইউনিট চালুর দাবী সাধারন মানুষের।
ময়মনসিংহের একটি অবহেলিত ও সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত থানা পাগলা । থানাটি প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার জনগন অধ্যুষিত। গফরগাঁও উপজেলার দক্ষিন অংশের ৮ টি ইউনিয়ন( মশাখালী ,পাঁচবাগ, উস্থি, লংগাইর,পাইথল, দত্তের বাজার , নিগুয়ারী, টাঙ্গাব) নিয়ে ২০১২ সালে গঠিত হয় পাগলা থানা । প্রায় ৮ বছর আগে এর কার্যক্রম শুরু হলেও স্বাস্থ্যখাতে এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। যার মাশুল দিতে হচ্ছে জনসাধারনকে ।
এই থানার কেন্দ্র পাগলা বাজারের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও নেই উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা । এখানে প্রসূতি মায়েদের প্রসব পূর্ববর্তী সেবা দেওয়া গেলেও প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা নেই । যা একজন প্রসূতি মায়ের জন্য অত্যন্ত বিপদজনক।
কেউ অসুস্থ হলে তাকে ছুটতে হয় পাগলা বাজার থেকে ১৬ কি:মি দূরবর্তী গফরগাঁও উপজেলা শহরে অথবা ময়মনসিংহ শহরে । সেখানে চিকিৎসা নিতে গিয়ে যাতায়াত ও অর্থনৈতিক ভোগান্তির শিকার হতে হয় এই থানার মানুষদের ।
সংবিধানের ৫ টি মৌলিক অধিকারের মধ্যে চিকিৎসা অন্যতম । আর সুস্থ জীবন-যাপনের অপরিহার্য অনুসঙ্গ এই সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারন মানুষ । যা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে কখনোই কাম্য নয় ।
যেসব রোগীদের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন সঠিক সময়ে তাদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না । কারন তাদেরকে নিয়ে যেতে হচ্ছে ১৬ কি.মি দূরবর্তী গফরগাঁও অথবা প্রায় ৬৫ কি.মি দূরের ময়মনসিংহ শহরের হাসপাতালগুলোতে। এতে অনেক সময় পথিমধ্যেই মৃত্যু বরণ করছেন অনেক রোগী । গর্ভবতী মহিলাদেরও পড়তে হচ্ছে নানা জটিলতায় ।
তাই পাগলা বাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে অাধুনিকায়ন করে এবং ডাক্তার সংখ্যা বৃদ্ধি করে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন করা প্রয়োজন। এখানে যাতে সার্বক্ষনিক ভাবে ডাক্তার পাওয়া যায় এবং সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতে হবে । এলাকার গর্ভবতী মায়েদের সকল ধরনের সেবা দেওয়া এবং নিরাপদ ভাবে সন্তান প্রসবে ব্যবস্থা নিশ্চিত করে মাতৃমৃত্যুহার হ্রাস করতে হবে ।
চলমান করোনাভাইরাস এর প্রভাবে স্থবির পুরো বিশ্ব। এর কোনো কার্যকর প্রতিষেধক অাবিষ্কৃত না হওয়ায় এর সংক্রমন রোধ করার অন্যতম উপায় হলো আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত শনাক্ত করে আইসোলেশনে রাখা। এর জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষা করা। আর নমুনা পরীক্ষা করার জন্য পাগলা থানার সোয়া ২ লক্ষ মানুষকে নির্ভর করতে হচ্ছে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওপর । এতে নমুনা সংগ্রহে চাপ বাড়ছে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের । এতে মানুষদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ।
এ পর্যন্ত পাগলা থানায় ৪ জন পুলিশ সদস্য,একজন পুলিশের স্ত্রী এবং মেয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং একজন মানুষ করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন । তাই পাগলা থানাবাসীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করার জন্য পাগলা বাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনা ইউনিট চালু করার দাবী সকল শ্রেণীপেশার মানুষের । এখানে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করলে করোনা রোগীদের সুচিকিৎসা প্রদানে সুবিধা হবে। এতে জনগন কে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে পাশাপাশি করোনা ঝুঁকিও কমানো সম্ভব হবে ।