খেলাধুলা

আফগান পেসার তোপে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১১৫ রান

ওয়ানডে সিরিজে আগুন ঝরিয়েছিলেন তরুণ বাঁহাতি পেসার ফজল হক ফারুকি। ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন টি-টোয়েন্টিতেও। তার সঙ্গে এবার যোগ দিলেন আরেক তরুণ পেসার আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এ দুজনের তোপে ১১৫ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬১ রানের বড় জয়ের পর আজকের ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু ফারুকি ও আজমের আগুনে বোলিংয়ে ঠিক যুতসই পুঁজি দাঁড় করাতে পারেনি স্বাগতিকরা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা আট টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এটিই বাংলাদেশের দলীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এর আগে ২০১৮ সালে দেরাদুনে ১৯ ওভারে ১২২ রানে অলআউট হয়েছিল টাইগাররা। আজ পুরো ২০ ওভার খেলেও ১১৫ রানের বেশি জমা পড়েনি স্কোরবোর্ডে। এই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় এড়াতে সফরকারী আফগানদের প্রয়োজন ১১৬ রান।
চোট কাটিয়ে ফেরা মুশফিকুর রহিমকে জায়গা করে দিতে এ ম্যাচে একাদশের বাইরে আগের ম্যাচে অভিষেক ক্যাপ পাওয়া ইয়াসির আলি রাব্বি। মুশফিকের ১০০তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ম্যাচের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে টিকে গেছেন ধারাবাহিকভাবে ব্যাট হাতে ব্যর্থ নাঈম শেখ। এ ম্যাচেও সুবিধা করতে পারেননি এই বাঁহাতি ওপেনার। মাত্র ৬৮ স্ট্রাইক রেটে ১৯ বল খেলে করেন মোটে ১৩ রান। রান আউটে কাটা পড়েন তিনি।
মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু থেকে দাপট দেখায় আফগানিস্তান। প্রথম ওভারে ব্যাট থেকে কোনো রান নিতে পারেননি মুনিম। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের খেতাব পেয়ে জাতীয় দলের টিকিট পাওয়া এই ওপেনার রানের জন্য হাপিত্যেশ করতে থাকেন, যদিও বাউন্ডারিও পেয়ে যান ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। আগের ম্যাচের মতো এদিনও চার দিয়ে রানের খাতা খোলেন মুনিম।
মুনিমের ব্যাটিংয়ের ধরণ বেশ ভালোভাবেই পড়ে ফেলেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী। ওই চার রানেই প্যাভিলিয়নে মুনিম। আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছোটানো লিটন দাস এদিও ব্যাটিং ঝড়ের বার্তা দেন ফারুকিকে ফাইন লেগ দিয়ে উড়িয়ে মেরে। তবে সেই ইনিংসটি বড় করতে পারেননি লিটন। আজমতউল্লাহর বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্যক্তিগত ১৩ রানে। ১০ বলের ইনিংসে বাউন্ডার ওই একটিই।
দুই উইকেট হারিয়ে পাওয়ার-প্লেতে ৩৩ রান তোলে বাংলাদেশ দল। নাঈম তখনো উইকেটে। সুযোগ পেয়েও আজও ইনিংস বড় করতে পারেননি টেস্ট মেজাজের ব্যাটিংয়ে উল্টো দলের উপর চাপ বাড়াতে থাকেন। ইনিংসের নবম ওভারের শুরুর বলে করিম জানাতের দুর্দান্ত এক থ্রোতে সাজঘরে নাঈম।
সতীর্থ সাকিব আল হাসানের দিকে তাহালে নাঈম অবশ্য কিছুটা স্বস্তি পাবেন। ব্যাট হাতে বাঁহাতি সাকিবের ফর্মটাও পড়তির দিকে। এ ম্যাচেও ব্যর্থ সাকিব। আগের ম্যাচে ৬ বলে ৫ করে আউট হয়েছিলেন তিনি। আজ সাকিবের ব্যাত থেকে আসে ৯ রান। যেখানে ৬০ স্ট্রাইক রেটে ১৫ বল খরচ করলেও কোনো বাউন্ডারি নেই তার ব্যাটে। ১০ ওভারে ৪৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে মহা বিপর্যয়ে বাংলাদেশ দল।
সেখান থেকে দলকে টেনের তোলার চেষ্টা করেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। পঞ্চম উইকেটে দুজন গড়েন ৪৩ রানের পার্টনারশিপ। তাদের জুটিতেই ইনিংসের ১২তম ওভারে এসে ৩৮ বল পর বাউন্ডারির সন্ধান পায় স্বাগতিক শিবির। দলের পড়তি রান তুলতে গিয়েই বিপত্তি বাঁধে। ইনিংসের ১৫তম ওভারে রাশিদ খানে কাটা পড়েন মাহমুদউল্লাহ। ৩ চারে ১৪ বলে করেন ২১ রান।
৪৩ রানের জুটি ভাঙার পর সতীর পথ অনুসরণ করেন মুশফিকও। পরের ওভারেই সাজঘরে তিনি। ফারিকির দ্বিতীয় শিকার হন ২৫ বলে ৩০ রানে। যেখানে তার ব্যাট থেকে আসে ৪টি চারের মার। একই ওভারে শেখ মেহেদীকে ফেরান আজমতউল্লাহ। এদিন রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। আফিফও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলে বড় রানের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় বাংলাদেশ দলের।
শেষদিকে মুস্তাফিজুর রহমানের ৫ বলে ৬ এবং নাসুম আহমেদের ৯ বলে অপরাজিত ৯ বলে ৫ রানের কল্যাণে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১১৫ রানে থামল বাংলাদেশের ইনিংস। এতে নির্ধাতির ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানের সংগ্রহ পেয়েছে স্বাগতিকরা। এই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় এড়াতে সফরকারী আফগানদের প্রয়োজন ১১৬ রান। আফগানদের হয়ে ফারুকি আর আজমতউল্লাহ সমান ৩টি করে উইকেট নেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button