আন্তর্জাতিক

প্রথম এইচআইভি মুক্ত হলেন এক মার্কিন নারী

লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত এক মার্কিন নারী স্টেম সেল পরিবর্তন করে এইচআইভি ভাইরাস মুক্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার গবেষকরা জানিয়েছেন, এইডস রোগের জন্য দায়ী এইচআইভি ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিকভাবে সুরক্ষিত এক দাতার কাছ থেকে স্টেম সেল পাওয়া এই নারী সুস্থ হয়েছেন। এনিয়ে এখন পর্যন্ত মোট তিন ব্যক্তি স্টেম সেল পরিবর্তনের মাধ্যমে এই মারণ ভাইরাস থেকে মুক্তি পেলেন।
মঙ্গলবার মার্কিন শহর ডেনভারে এক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে ওই নারীর সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনা প্রকাশ করা হয়। মধ্যবয়সী এই নারী ১৪ মাস ধরে এইচআইভি ভাইরাস মুক্ত রয়েছেন।
ওই নারী তীব্র মাইলয়েড লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। এটি এমন একটি ক্যান্সার যা অস্থি মজ্জার রক্ত গঠনকারী কোষে শুরু হয়। চিকিৎসার জন্য নাভীর রক্ত গ্রহণ করার পর থেকে – ওই নারী ১৪ মাস ধরে ভাইরাসমুক্ত ছিলেন। এমনকি এ সময় তাকে কোন অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপিও নিতে হয়নি। এই শক্তিশালী থেরাপি এইচআইভি চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
তবে নারী হিসেবে প্রথম হলেও এই সাফল্য কিন্তু প্রথম হল না। এর আগেও দুইজন পুরুষ স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে এইচআইভি মুক্ত হয়েছেন। তাই আগেও এই বিষয়ে সাফল্য এসেছে বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক এইডস সোসাইটির সভাপতি শ্যারন লিউইন বলেন, এই নিয়ে তৃতীয়বার এই চিকিৎসার মধ্যমে এইচআইভি থেকে সেরে ওঠা সম্ভব হল। নারীদের ক্ষেত্রে এটাই প্রথমবার।
এই সাফল্য এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের বড় এক গবেষণার ফসল হিসেবে। গবেষণাটি চালিয়েছেন ইউনিভার্সিটি ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলসের ডা: উবোনে ব্র্যাসন এবং জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা: দেবরা পারসদ। এই দুই বিজ্ঞানীর নেতৃত্বে ২৫ জন এইচআইভি আক্রান্তের কর্ড ব্লাডের মাধ্যমে স্টেম সেল থেরাপি করা হয়। এক্ষেত্রে ক্যানসারসহ এইচআইভি-এর চিকিৎসাতেও এর বিশেষ ফল মেলে।
এক্ষেত্রে রোগীদের প্রথমত কেমোথেরাপির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এই থেরাপির মাধ্যমে শরীরের ক্যানসার কোষ মরে যায়। এরপর চিকিৎসকরা রোগীর স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেন। এক্ষেত্রে ভাইরাসের জেনেটিক মিউটেশনও মাথায় রাখা হয়।
বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, এই মানুষগুলির শরীরে তৈরি হয় এক ধরনের ইমিউনিটি। এই ইমিউনিটি এইচআইভি থেকে রক্ষা করে। শ্যারন লিউইন বলেন, ‘বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে এর মাধ্যমে যে এইচআইভি সারানো যেতে পারে এটা পরিষ্কার। তাই আগামীদিনে আরও রাস্তা খুঁজে নিয়ে এই চিকিৎসার দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button