ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণতান্ত্রিক দেশে স্বাধীন মতপ্রকাশের হুমকি হিসেবে অবিহিত করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ওই আইনে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এ দাবি জানায়।
বিভিন্ন দুর্নীতি-অনিয়মের সংবাদ, ব্যঙ্গচিত্র, আলোকচিত্র, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মত, ভিন্নমত প্রকাশের কারণে সারাদেশের লেখক-সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা, মামলা, হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে স্বচ্ছাচারিতার পথ পরিহার করে স্বাধীন মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় অবিলম্বে এ ধরনের অগণতান্ত্রিক হয়রানি বন্ধ করে আটকদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালের শুরু থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সারাদেশের ১৮০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও ৫৭ ধারায় মামলা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু গত বছরেই ৩৮ জন সাংবাদিক মামলা, গ্রেফতার, রিমান্ড ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। আর করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মোট ৬৭টি মামলার মধ্যে ৩৭ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে কার্টুনিস্ট, সাংবাদিকসহ ৭৯টি ঘটনায় মোট ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব মামলায় সাংবাদিকসহ অন্যান্য নাগরিকদের যে প্রক্রিয়ায় গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হয়েছে, তা একটি গণতান্ত্রিক দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারকে ভূলুণ্ঠিত করে স্বেচ্ছাচারিতার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের শামিল।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের উচিৎ ছিলো এমন পরিবেশ তৈরি করা- যাতে গণমাধ্যম স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠভাবে তথ্যপ্রকাশ করতে পারে। কারণ তথ্যের স্বাভাবিক প্রকাশ বা প্রবাহে ঘাটতি পড়লে গুজব ও আস্থাহীনতার বিকাশ ঘটবেই। বাস্তব তথ্যের সাথে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে প্রকাশিত তথ্যের যত বেশি ফারাক হবে, তত বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি হবে, সঙ্কট বাড়বে এবং ভুল পরিকল্পনার আত্মঘাতি ঝুঁঁকি তৈরি হবে। অবিলম্বে এই আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো বাতিল এবং দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্যপ্রকাশকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করে আটকদের মুক্তি দিতে হবে।
সুএঃ দৈনিক ইনকিলাব।