শুরু হচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বযু্দ্ধ
মরুর বুকে পর্দা উঠছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের। রোববার (১৭ অক্টোবর) বাছাইপর্বের ম্যাচ দিয়ে ওমানে শুরু হচ্ছে ক্রিকেটের মারকাটারি এই সংস্করণের সপ্তম আসর। করোনার কারণে ভারত থেকে এবারের আসর সরে যাওয়ায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে ওমান। তবে স্বাগতিক থাকছে ভারতই। আইসিসির ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যার আয়োজক কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশ নয়।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি। প্রতিটি বল ঘিরেই থাকে বাড়তি উন্মাদনা। আর সেটা যদি হয় বিশ্বকাপের আসর তবে তো কথাই নেই! ওমানের রাজধানী মাসকাট শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে আল আমেরাত ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম পর্বের ছয়টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। রোববার ‘বি’ গ্রুপের দুটি ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক এই আসরের মহাযজ্ঞ।
বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় এবারের আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে মাঠে নামছে পাপুয়া নিউগিনি। এছাড়া একইদিন রাত ৮টায় স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
টি-টোয়েন্টির এবারের আসরে ১৬টি দল অংশ নিলেও বাছাইপর্বে খেলবে র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে থাকা আট দল। দুই গ্রুপ থেকে দুটি করে মোট চারটি দল পাবে মূল পর্বে খেলার টিকিট। এছাড়া র্যাংকিংয়ের শীর্ষ আট দল সরাসরি খেলবে সুপার টুয়েলভ পর্বে। আগামী ২২ অক্টোবর বাছাইপর্ব শেষে ২৩ অক্টোবর শুরু হবে সুপার টুয়েলভের জমজমাট লড়াই। ১২ দলের এই পর্বেও রয়েছে দুটি গ্রুপ। প্রতি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল উঠবে সেমিফাইনালে। ১৪ নভেম্বর দুবাইয়ে ফাইনাল।
এদিকে, বিশ্বকাপের রঙয়ে রঙ্গিন মাসকাটের আল আমেরাত স্টেডিয়াম। চারিদিকে সাজ সাজ রব। আইসিসি আর আয়োজক বিসিসিআইয়ের কর্মীদের ব্যস্ততা। রাত পোহালেই বিশ্বকাপ শুরু। তাই সব দিকেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে।
আধুনিক স্টেডিয়ামগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে কিছুটা পিছিয়ে থাকবে মাসকাটের আল আমেরাত স্টেডিয়াম। তবে দৃষ্টিনন্দন এই স্টেডিয়াম মুগ্ধ করবে যে কাউকে। চার দিকে পাহাড় বেষ্টিত এই স্টেডিয়াম প্রথম দফায় দেখলে অনেকের মনে হতে পারে এটি যেন নিউজিল্যান্ডের কোনো মাঠ। বিশ্বকাপকে ঘিরে বসানো হয়েছে ভিআইপি গ্যালারি, প্রেস বক্স, কমেন্ট্রি বক্স, ইলেক্ট্রনিক স্কোরবোর্ডের মতো অত্যাবশ্যকীয় সব কিছুই। ওমানের জন্য ঐতিহাসিক একক্ষণ। আর এই ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত আছে বাংলাদেশের নামও। স্টেডিয়ামের ১৫ মাঠ কর্মী বাংলাদেশের। যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত করছেন এই মাঠ।
এর আগেই ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আইসিসি) সূত্রে জানা গিয়েছিল, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ব্যবহার হবে ডিআরএস প্রযুক্তি। প্রতিটি দল চাইলে ইনিংসে দুইটি করে রিভিউ নিতে পারবে। ম্যাচে নিরপেক্ষ ও সঠিক সিদ্ধান্ত পাওয়ার লক্ষ্যেই এ নিয়ম করা হয়েছে।
এছাড়া আরও একটি পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তাহলো বৃষ্টি বাধায় কিংবা অন্যান্য কারণে খেলা দেরি হলে, ন্যূনতম ওভারের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। এতদিন পাঁচ ওভার খেলা হলেই কোনো ম্যাচের ফল আসতো। এই নিয়ম থাকবে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচেও। কিন্তু সেমিফাইনাল ও ফাইনালে বদলে যাবে সেটিও। অন্তত ১০ ওভার খেলা না হলে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে ম্যাচটি।