করোনায় আক্রান্ত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক কামাল লোহানী আর নেই। আজ শনিবার সকাল ১০টার পরে বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃতুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। শনিবার কামাল লোহানীর ছেলে সাগর লোহানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি ফুসফুস ও কিডনির জটিলতা ছাড়াও হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের সমস্যাতেও ভুগছিলেন।
কামাল লোহানীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল তার মেয়ে ঊর্মি লোহানী জানান, কামাল লোহানীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় ১৭ জুন সকালে তাঁকে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল কোভিড টেস্টের ফলাফল হাতে পান তাঁরা। রিপোর্টে কামাল লোহানীর কোভিড-১৯ পজিটিভ বলা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে প্রথমে কামাল লোহানীকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেখানে কোনো সিট পাওয়া যায়নি।
ঊর্মি লোহানী জানান, কামাল লোহানী অনেক দিন ধরেই ফুসফুস ও কিডনি সমস্যায় ভুগছিলেন। শুরুতে লকডাউনে চিকিৎসা করাতেও বেশ সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। হাসপাতালে নেওয়া সমস্যা ছিল। টেলিফোন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করানো হচ্ছিল। কিন্তু অবস্থা বেশ গুরুতর হয়ে পড়লে গত ১৮ মে তাঁকে রাজধানীর পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে বেশ কিছুদিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে ২ জুন তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়েছিল। পরে আবার ভর্তি করাতে হয়েছে।
কর্মজীবনে কামাল লোহানী দৈনিক মিল্লাত পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু করেন। এরপর আজাদ, সংবাদ, পূর্বদেশ, দৈনিক বার্তায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটেরও উপদেষ্টা কামাল লোহানী বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দুবার মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি হিসেবে এবং ছায়ানটের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই গুণী ব্যক্তিত্ব। ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি।