সিনহা হত্যা : চতুর্থ সাক্ষী কামালের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে
মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার বিচারকার্যের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
আজ সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ১০ মিনিটে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আদালতে উপস্থিত হওয়ার পর পরই কামাল হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হয়।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, অন্য দিনের মতো সকাল পৌঁনে ১০টার দিকে মামলার আসামি সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ ১৫ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় দিনের জন্য তিন জন সাক্ষীর হাজিরা দেয়া হয়েছে। তারা হলেন- কামাল হোসেন, শওকত আলী ও হাফেজ মো. আমিন।
তিনি আরও জানান, সাক্ষ্যগ্রহণ দ্রুতই শেষ হবে এমন ধারণা করে রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ছয়জনের হাজিরা দেওয়া হলেও প্রথমদিনে মাত্র একজনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। এ কারণে দ্বিতীয় দিনে তিনজনের হাজিরা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে সবার সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হবে। আসামিক্ষের আইনজীবীদের সহযোগিতা পেলেই এটা সম্ভব বলেও জানান তিনি।
প্রথম দফায় সাক্ষী হিসেবে সমন পাওয়া বাকি অপেক্ষমাণ সাক্ষীরা হলেন, শামলাপুর এলাকার ফিরোজ, মুহিবুল্লাহ, ইউনুস, মো. আবদুল হালিম, রামু সেনা নিবাসের সার্জেন্ট মো. আইয়ূব আলী, সিনহার সফরসঙ্গী শিপ্রা দেবনাথ, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শাহীন আবদুর রহমান ও রনধীর দেবনাথ এবং টেকনাফের বাহারছরার মারিশবনিয়ার হাফেজ জহিরুল ইসলাম।
এর আগে ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট টানা তিন দিন মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ও বাদী শারমিন সাহরিয়া ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। প্রথমদিনের সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতের কাঠগড়ায় হাঁটু গেড়ে বসে মোবাইলফোনে কথা বলেন ওসি প্রদীপ। তার কথা বলার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে।
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। এর পর মেজর সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন র্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।