তালেবানের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা পুলিশ সদস্যকে হত্যার অভিযোগ
তালেবানের কর্মীরা আফগানিস্তানের প্র্রাদেশিক শহরের এক নারী পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে তার আত্মীয়রা। এই নারী পুলিশ বানু নিগারের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিগার স্থানীয় কারাগারে কাজ করতেন এবং আট মাসের গর্ভবতী ছিলেন।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) তিনজন বন্দুকধারী ওই পুলিশ সদস্যের বাড়িতে এসে পৌঁছায় এবং বাড়িতে তল্লাশি চালায়। এরপর পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে তাদের সামনেই বানু নিগারকে গুলি করা হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, বানু নিগারকে মধ্যাঞ্চলের ঘোর প্রদেশের ফিরোজকোহ শহরে তার আত্মীয়দের সামনেই গুলি করা হয়। আফগানিস্তানে যখন নারীরা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সোচ্চার হচ্ছিল তখন এই হত্যাকাণ্ড ঘটলো।
নিহতের পরিবার বলছে, স্থানীয় তালেবান এই ঘটনার তদন্ত হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই ঘটনার ব্যাপারে খুব বেশি তথ্য এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ ফিরোজকোহ শহরে অনেকেই এ নিয়ে মুখ খুলতে চাইছে না। এই ঘটনার এমন কিছু ছবি আত্মীয়-স্বজনরা শেয়ার করেছেন, যাতে একটি কক্ষের দেয়ালে ছিটকে পড়া রক্তের দাগ দেখা যাচ্ছে, সামনে পড়ে আছে একটি লাশ। নিহতের মুখ মারাত্মকভাবে বিকৃত।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হামলাকারীদের আরবীতে কথা বলতে শোনা গেছে।
গত ১৩ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর তারা নিজেদেরকে আগের চেয়ে অনেক সহনশীল বলে তুলে ধরার চেষ্টা করছিল। কিন্তু আফগানিস্তানের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের নিষ্ঠুরতা এবং নির্যাতনের নানা খবর পাওয়া যাচ্ছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো আফগানিস্তানে নানা প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড, লোকজনকে বন্দী করা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অনেক ঘটনার তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। তালেবান আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিল যে তারা সাবেক আফগান সরকারের সঙ্গে যারা কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রতিশোধ নেবে না।
এর আগে ১৯৯০-এর দশকে যখন তালেবান আফগানিস্তান শাসন করেছিল, তখন তারা সেখানে নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করেছিল। তবে এবার তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কীভাবে পড়াশোনা হবে তার নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে।
মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবে তবে নারী এবং পুরুষের ক্লাস হবে পৃথকভাবে। নারী শিক্ষার্থীদের বোরকা বা চাদর এবং নিকাব পরতে হবে।
এদিকে, শনিবার অধিকারের দাবিতে কাবুলে বহু নারী বিক্ষোভ মিছিল করে। যদিও মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে তালেবানরা। এই বিক্ষোভ থেকে আফগান নারীরা গত দুই দশকে যেসব অধিকার অর্জন করেছে, সেগুলো বহাল রাখার দাবি তোলা হচ্ছিল।
বিক্ষোভের আয়োজনকারী নারী সংগঠনটি বলছে, তারা যখন একটি ব্রিজ থেকে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের দিকে আগানোর চেষ্টা করছিলেন, তখন তালেবান তাদের দিকে টিয়ার গ্যাস এবং পিপার স্প্রে ছোড়ে।
খবর বিবিসি