ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শৃংখলা ফেরাতে নানান উদ্যোগ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হাইওয়ে পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশের এ বিভাগটি চালু হওয়ার পরই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এ বিষয়ে নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে তাতে সফলতা পেয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশটি নিয়ন্ত্রণ করে হাইওয়ে কাঁচপুর থানা পুলিশ। মহাসড়কের ৯০ কিলোমিটার রাস্তা এই থানার অধীনে রয়েছে। ঢাকার সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ভুলতা হাউছিয়া হয়ে পুরিন্দা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত, অন্যদিকে কাঁচপুর মদনপুর হয়ে মেঘনা ঘাট এলাকা পর্যন্ত কাঁচপুর হাইওয়ে থানার নিয়ন্ত্রাধীন মহাসড়ক।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার বর্তমান অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামানের সুদক্ষ পরিচালনায় বর্তমানে মহাসড়ক নিরাপত্তা নিয়ে নানা কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহকালে জানা যায়, গত ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর যোগদান করার পর ওসি মনিরুজ্জামানের সুদক্ষ পরিচালনায় তার কর্ম এলাকার মহাসড়ক এখন অনেকটাই নিরাপদ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিতি লাভ করেছেন।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় বর্তমান জনবল ১৭০ জন। এই থানার অধীনে শিমরাইল ও ভুলতায় দুটো হাইওয়ে ক্যাম্প রয়েছে। প্রতিটি ক্যাম্পে একজন করে পুলিশ পরিদর্শকের নেতৃত্বে একটি টিম কাজ করছে। সড়ক নিরাপত্তার কৌশল হিসেবে ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, তারা মাঝে মাঝে যাত্রী সাধারণ, পরিবহনের চালক ও হেলপারদেরকে জনসচেতনতামূলক কাউন্সিলিং করে থাকেন।
পাশাপাশি নিয়মিত ক্যাম্পিংয়ে জনসচেতনতামূলক মাইকিং করে থাকেন। তিনি আরও বলেন, ৬ জুলাই ২০২১ থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইন অমান্য করায় প্রায় ২১ হাজার পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব লাভ করচে প্রায় ৫৬ লাখ টাকা। ওসি মনিরুজ্জামান আরও বলেন, মহাসড়ক নিরাপত্তার জন্য তারা সরকারী ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও বেশ কিছু সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছেন। ফলে মহাসড়কে এখন অপরাধ প্রবনতা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) মেহেদী হাসান বলেন, তাদের কর্ম এলাকায় ১৭২টি ফিডার সড়ক রয়েছে। এসব সড়ক থেকে অটো বাইক, ইজিবাইক, অটো রিক্সা মহাসড়কে ঢুকে পড়ে। এগুলো সামাল দিতেই কস্ট হয়। কারণ জনবল অপ্রতুল থাকায় অনেক সময় হিমসীম খেতে হয় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের। প্রতিটি ফিডার রোডে একজন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করতে পারলে কিছুটা উপকৃত হওয়া যতে। এটা বাস্তবায়ন ধরতে হলে হাইওয়ে পুলিশের জনবল বাড়াতে হবে।
টিআই মেহেদী হাসান বলেন, কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় ২টি রেকার আছে। কাজের গতিশীলতা বাড়াতে রেকারের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা যেতে পারে। কাঁচপুর থানার টিআই মেহেদীহ হাসান আরো বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট দায়িত্বের পাশাপাশি আমরা মানবিকতার জন্য অনেক কাজ করে থাকি। কেউ মহাসড়কে আহত হলে তার চিকিৎসা ও সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তার বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে থাকে।
মহাসড়কে চুরি, ডাকাতির বিষয়ে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন বলেন, হাইওয়ে পুলিশ সৃষ্টির পর মহাসড়কে ডাকাতি অনেকটাই কমেছে। তবে গার্মেন্টস আইটেম কিছু মালামাল গাড়ী থামিয়ে চুরি করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। সেই বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক থাকায় এখন তা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
মহাসড়কের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার আলী আহমেদ খান বলেন, মহাসড়কগুলোর পূর্বেকার নানা অসংগতি দুর করার জন্য হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আধুনিক কিছু কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি এর সুফল মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা ধীরে ধীরে পাবে।