৪ দিনের রিমান্ডে পরীমনি
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এক মামলায় আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনিকে ৪ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। একই মামলায় এই অভিনেত্রীর মামা পরিচয় দেয়া আশরাফুল ইসলাম দীপুকেও চারদিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর সিএমএম আদালতের বিচারক হাকিম মামুনুর রশীদ শুনানি শেষে তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বনানী থানার মাদক মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে আসামির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চাওয়ার পাশাপাশি জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রিমান্ডের জোর দাবি জানান। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে পরীমনিকে আদালতে হাজির করার পর তার পক্ষে আদালতে লড়তে ওকালত নামায় স্বাক্ষর করা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন আইনজীবীরা।আইনজীবীদের মধ্যে কয়েকটি গ্রুপ সৃষ্টি হলে একপর্যায়ে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ এজলাস ত্যাগ করেন।
এসময় আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘আগে আপনারা ঠিক করেন, কে আসামি পরীমনির আইনজীবী হবেন। তারপর শুনানি হবে।‘
এর আগে সন্ধ্যার পর পরীমনিকে নিয়ে আদালতের পথে রওয়ানা হয় বনানী থানা পুলিশ। আদালতে পৌঁছলে পরীমনির পক্ষে আইনজীবী কে হবেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
এদিকে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের পর সন্ধ্যার দিকে র্যাব সদস্যরা পরীমনিকে বনানী থানায় নিয়ে আসে। পরে মামলা রুজু শেষে তাকে কোর্টে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
এদিন সন্ধ্যার দিকে শামসুন্নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমনি ও আশরাফুল ইসলাম ওরফে দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮- এর ৩৬ (১) এর সারণি ২৪(খ)/৩৬ (১) এর সারণি ১০ (ক)/৪২(১)/৪১ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার (৪ আগস্ট) বিকেলে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ ওয়াইন, ভয়ংকর মাদক আইস, এলএসডি ও মাদক সেবনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে র্যাব।
এরপর আলোচিত এ নায়িকাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় র্যাবের সদর দপ্তরে। সেখানে র্যাবের মুখোমুখি হন পরীমনি। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এদিকে র্যাব সদর দপ্তরে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, পরীমনির বাসায় মিনিবার রয়েছে। মদের লাইসেন্স থাকলেও মেয়াদ পেরিয়েছে অনেক আগেই। পরীমনি ও নজরুল রাজসহ এই চক্র ডিজে পার্টি আয়োজনের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করত। এসব অর্থ তারা বিভিন্ন ব্যবসার কাজে লাগাত।
ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, নজরুল রাজের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে তার কম্পিউটারসহ কিছু ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে। তার মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়েছে। এগুলো থেকে বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও চিত্র পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করা হবে।