বিনোদন

কুমারীত্ব প্রমাণের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করার অভিযোগ ইয়েমেনে অভিনেত্রীকে

ইয়েমেনের এক অভিনেত্রী ও মডেলের বিরুদ্ধে ‘অশালীন আচরণ’ এবং মাদক রাখার অভিযোগে মামলা করেছে দেশটির হুথি বিদ্রোহী কর্তৃপক্ষ। ২০ বছর বয়সী ওই মডেলের নাম ইনতিসার আল-হাম্মাদি। তবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করছেন ইনতিসার।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত রাজধানী সানার কারাগারে তাকে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আটক রাখা হয়েছে। হুথি বিদ্রোহীদের পরিচালিত জেলখানায় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন এবং কারাগারের হাসপাতালে ইনতিসারকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ইনতিসার আল-হাম্মাদির আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, তাকে (ইনতিসার আল-হাম্মাদি) জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় শারীরিকভাবে নির্যাতন, হয়রানি করেছে, বর্ণবাদী অপমানজনক কথাবার্তা বলা এবং চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি নথি স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছে।

কৌঁসুলিরা এমনকি তাকে ‘কুমারীত্বের পরীক্ষা’ দিতে বাধ্য করার হুমকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ করা হচ্ছে।

ইনতিসারের আইনজীবী হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেছেন, হাম্মাদির মামলার কাগজপত্র দেখতে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং চলতি মাসের শুরুতে হাম্মাদিকে আদালতে হাজির করা হলেও তার আইনজীবীকে আদালতে প্রতিনিধিত্ব করতে দেওয়া হয়নি।

হুথি বিদ্রোহীরা ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তারা এই ঘটনা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। ইনতিসার আল-হাম্মাদির বাবা ইয়েমেনি এবং মা ইথিওপিয়ান। তিনি চার বছর ধরে ইয়েমেনে মডেল হিসাবে কাজ করছেন। তিনি ইয়েমেনের দুটি টেলিভিশন সিরিজেও অভিনয় করেছেন।

মডেল ও অভিনেত্রী ইনতিসার আল-হাম্মাদি

হাম্মাদি রক্ষণশীল মুসলিম সমাজের বিধি উপেক্ষা করে কখনও কখনও হিজাব ছাড়াই তার ছবি অনলাইনে পোস্ট করেছেন। তার আইনজীবী বলেছেন, হাম্মাদি চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি সানায় আরও তিনজনের সঙ্গে গাড়িতে ভ্রমণের সময় হুথি বাহিনীর সদস্যরা গাড়িটি থামায় এবং সবাইকে গ্রেফতার করে।

ওই আইনজীবী আরও জানান, ‘হাম্মাদির ফোন জব্দ করা হয় এবং তার মডেলিং-এর ফটোগুলোকে অশালীন কাজ বলে বিবেচনা করা হয়। সে কারণে তাদের (হুথি কর্তৃপক্ষের ) চোখে তিনি বেশ্যা বলে গণ্য হন।’

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, মে মাসের শেষ দিকে একদল মানবাধিকার কর্মী ও একজন আইনজীবীকে হাম্মাদির সাথে জেলখানায় দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তারা বলেন, যারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন, তারা হাম্মাদিকে চোখ বাঁধা আবস্থায় একটি নথিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন।

ওই নথিটি ছিল কার্যত বেশ কিছু অপরাধের জন্য ‘স্বীকারোক্তি’।

তাকে জোর করে ‘কুমারীত্ব পরীক্ষার’ উদ্যোগ নেওয়ার পর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশানাল তার নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দেয়। এরপর গত মে মাসের শুরুতে কৌঁসুলিরা সেই পরিকল্পনা বাতিল করেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ‘কুমারীত্ব প্রমাণের পরীক্ষার’ কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, এটা কোনো নারী কুমারী বলে চিকিৎসাগত কোনো ইঙ্গিত দেয় না এবং এটি মানবাধিকারের লংঘন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button