জাতীয়

টিকা নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না : প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না বলে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনার ভ‌্যাকসিন সংকট কেটে গেছে। আগামী জুলাই মাসে আরও ভ‌্যাকসিন আসবে। দ্রুত বড় পরিসরে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা আছে।

আজ মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকালে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এ আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, আমরা ৮০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনব। বিশেষ করে বিদেশে যারা যাবেন, আগে তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি। চীন, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে যখন গবেষণা চলছিল তখনই আমরা যোগাযোগ শুরু করেছিলাম। কিন্তু ভারত ভ্যাকসিন এক্সপোর্ট বন্ধ করে দেয়ায় আমরা অসুবিধায় পড়ি। কিন্তু আমরা আবার ব্যবস্থা করেছি। ভ্যাকসিন নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না। জুলাইয়ে আরও ভ্যাকসিন আসবে। এরপর আমরা ব্যাপকভাবে আবারও টিকা কর্মসূচি শুরু করব।’

দেশে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে। ভারতের সিমার ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সেই টিকা কেনার চুক্তিও হয় বাংলাদেশের। চুক্তি হয় ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা কেনার, যা প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ধাপে ধাপে দেয়ার কথা সিরামের। সিরাম মাত্র ৭০ লাখ টিকা দিয়ে জানায়, তারা আপাতত টিকা রপ্তানি করবে না। এর বাইরে ভারত সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে ৩৩ লাখ টিকা দেয়। ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে টিকা সংকটের মুখে এক পর্যায়ে দেশে বন্ধ হয়ে যায় গণটিকা কার্যক্রম। এরমধ্যে করোনা প্রতিরোধী টিকা বণ্টানের আন্তর্জাতিক ফ্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্সের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশ কিছু টিকা পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছে বাংলাদেশ। ফাইজারের এক লাখের বেশি ডোজ এরই মধ্যে দেশেও পৌঁছেছে। উপহার হিসেবে টিকা দিয়েছে চীনও। সেগুলো দিয়ে আবার শুরু হয়েছে গণ টিকাদান।

টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে প্রবাসী কর্মীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রবাসী কর্মীদের আগে টিক দিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমি বলে দিয়েছি, ফাইজারের যে টিকাগুলো আছে, সেগুলোর দুটি ডোজই যেন প্রবাসী কর্মীদের দেয়া হয়।

‘দেশের ৮০ ভাগ জনগোষ্ঠিকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা আমরা করেছি। ভ্যাকসিন নিশ্চিত করে দ্রুত যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারি সে ব্যবস্থা নেব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের সঠিক পদক্ষেপের কারণে করোনা মহামারির মধ‌্যেও দেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে। মানুষের পাশে থেকে জীবন ও জীবিকা রক্ষায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারি থেকে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শুরু থেকেই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। দেশব্যাপী ও অঞ্চলভিত্তিক লকডাউন কার্যকরসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি দরিদ্র মানুষকে ত্রাণ সহযোগিতা প্রদানসহ জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনসহ করোনা মোকাবিলায় ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের জন্য সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান, আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ল্যাব স্থাপনসহ করোনা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করায় ভাইরাসের বিস্তার রোধে অনেক উন্নত দেশের চেয়ে বাংলাদেশ সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button