সংক্রমণ বৃদ্ধির হার আশঙ্কাজনক, বেপরোয়া চলাফেরাকে দায়ী করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যবিধি না মানায় নতুন করে আবারও মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, লোকজনের বেপরোয়া চলাফেরা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। হাসপাতালে আগের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা নিয়ে এখন মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, যা বিপদ ডেকে আনছে। দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার ২ শতাংশের ঘরে নেমে গিয়েছিল। এখন তা আবার বেড়ে ৬ শতাংশের কাছাকাছি চলে গেছে। এটা আশঙ্কাজনক।
তিনি বলেন, আমরা একটু বেপরোয়া হয়ে গেছি। আমরা মাস্ক ব্যবহার করছি না, কম করছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কুণ্ঠা বোধ করছি। অনেক বেশি সামাজিক অনুষ্ঠান করছি, যার মাধ্যমে সংক্রমণ আবার বেড়ে গেছে।
জাহিদ মালেক বলেন, জেলা পর্যায়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জেলার কমিটি যেন যথাযথ পদক্ষেপ নেয়। বিভিন্ন প্রোগ্রাম যেন সীমিত করে। যেগুলো না করলে সমস্যা হবে না সেগুলো যেন স্থগিত করে। বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে কথা হয়েছে, তারা যেন তাদের হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখে। হাসপাতালে যে বেড বরাদ্দ ছিল, সেগুলো আবারও প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসার জন্য যা লাগে, সব ব্যবস্থা করা আছে।
তিনি বলেন, কিছু দেশকে কোভ্যাক্সের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। আমাদের জানানো হয়েছে জুন মাসের আগে আমরা কিছু ভ্যাকসিন পাব। জুনের মধ্যে ১ কোটি ৯ লাখ টিকা দেওয়ার কথা। কিন্তু এখনও সঠিক ডেট দেয় নাই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের আবারও সজাগ হতে হবে। করোনা চলে যায়নি। করোনা যখন যাবে তখন আমরা সবাই জানব। শুধু বাংলাদেশ না, পুরো পৃথিবী থেকে দূর হলেই বাংলাদেশ নিরাপদ হবে। কাজেই এক ডোজ টিকা নিয়েই ভাবা উচিত না যে করোনামুক্ত। টিকা নিলেই করোনামুক্ত হবে না। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর সময় লাগবে সুরক্ষা তৈরি হতে। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আগে করোনা থেকে সুরক্ষা তৈরি হবে না।
জাহিদ মালেক বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে কোভ্যাক্সের ১ কোটি ৯ লাখ ডোজ টিকা আসতে পারে। আর ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় চালান এই মাসে আসতে পারে। এরপর বাকি টিকা ধারাবাহিকভাবে আসতে থাকবে।
টিকার জন্য ৫৩ লাখেরও বেশি নিবন্ধন হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ৪১ লাখেরও বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। টিকার দুটি ডোজ দেওয়া হয় একজনকে। সে হিসাবে ২ কোটি ডোজ দিয়ে ১ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে।
স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী এবং আবাসিক ছাত্রদের টিকা দেওয়া হবে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি রয়েছে, এর আগেই শিক্ষার্থীও শিক্ষকদের টিকা দেওয়া হবে।
বয়সসীমা ৪০ নির্ধারণ করার কারণে দেশের ৪ কোটি মানুষকে টিকা দিতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেভাবে ভ্যাকসিনেশন হচ্ছে, এ পর্যন্ত ভালোই আছে। এই ভালোটা বজায় রাখতে চাই। টিকা যদি আমাদের হাতে বেশি আসে, সব শিডিউল ঠিক থাকে, তাহলে হয়তো বয়সের বিষয়ে চিন্তা করতে পারব।