সুরমা নদীর খেয়াঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়
সুনামগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর খেয়াঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। খেওয়া পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র কথা কাটাকাটির ঘটনাও ঘটছে। খেওয়াঘাটে সাইনবোর্ড স্থাপনের নীতিমালা থাকলেও কোনো খেওয়াঘাটে সাইনবোর্ড নেই।
খেওয়া যাত্রীরা জানান, খেওয়াঘাটের ইজারা নিয়ে পরে সাব ইজারা দেওয়া হচ্ছে। সাব ইজারা নিয়ে ঘাটে ভাড়া আদায় করেন অন্যজন। ইজারাদার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে কৌশলে উগ্র প্রকৃতির লোকজনকে নিযুক্ত করেন। যাত্রীদের সময়ের গুরুত্ব না বুঝে সাব ইজারাদার তাদের খেয়াল খুশিমত ফেরি পারাপার করেন। পৌরসভার ইজারাকৃত ফেরি পারাপারে এমন সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। খেওয়া যাত্রীরা এই সমস্যা নিরসনে নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অনুপ চৌধুরী জানান, পৌরসভার অধীনে সুরমা নদীতে ৪টি খেওয়াঘাট প্রতিবছর ইজারা হয়। তাদেরকে বলা হয় সাইনবোর্ড স্থাপন করতে। কিন্তু তারা এই নির্দেশনা অমান্য করে চলছে।
শহরের লঞ্চঘাটের, জেইলরোডের, চাঁদনীঘাটের ও সাহেববাড়ি খেওয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন ইব্রাহীমপুর গ্রামের মানুষ, সদরগড়, কুরুতলা, আমিরপুর, অক্ষয়নগর, জগন্নাথপুর গ্রামের মানুষ নিয়মিত শহরে আসা যাওয়া করেন।
আবার সুরমা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষও এসব খেওয়াঘাট হয়ে শহরে আসা-যাওয়া করেন। কলেজ ও স্কুলে পড়–য়া শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণী পেশার লোকজন খেওয়া পারাপার হয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে যান প্রতিদিন। প্রতিদিন সকালে কোনো না কোনো ঘাটে তাড়াতাড়ি আসা যাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে থাকে। এসব সমস্যা নিরসনে সঠিক তদারকির মাধ্যমে প্রতি ঘাটে দুইটি করে নৌকা, বন্ধানী পদ্ধতি এবং সাইনবোর্ড স্থাপন জরুরি প্রয়োজন।
হয়রানির শিকার খেওয়াযাত্রী আব্দুর রহিম বলেন, একবার পার হলে দিতে হয় ৫ টাকা। একটি সাধারণ বস্তা হাতে নিয়ে গেলে তাতেও ৫ টাকা দিতে হয়। ভাড়া মাফ নেই শিক্ষার্থীদেরও। অফিস আদালত না হলে শহরে আসা বন্ধ করে দিতাম।
হয়রানির শিকার শিক্ষার্থী শহীদ মিয়া জানান, করোনা পরিস্থিতির কথা শুনিয়ে ভাল বাণিজ্য করে আসছে খেওয়াঘাটের ইজারাদারগণ। আমি প্রতিদিন আসা যাওয়া ১০ টাকা করে দিয়ে আসছি। অনেকের কাছ থেকে ২০ টাকা করেও আদায় করা হয়েছে। সামাদুল ইসলাম বলেন, ভাড়া আদায়কারীদের এতো খারাপ আচরণ দেশের কোথাও নেই। কিছু বললেই হাত নেড়ে বলে দেয়, কী করবে করিস। আমরা এসব ফেরিতে নানাভাবে নির্যাতিত এবং অপমানিত হয়ে আসছি। বিশেষ করে লঞ্চঘাটের ফেরিতে এমন ঘটনা হয় বেশি।
কয়েকদিন আগে ঘাটে বসা কালা মিয়া নামের লোক সাংবাদিকদের সাথেও খারাপ আচরণ করেছে।
গণমাধ্যম কর্মীরা জানান, ইব্রাহীমপুর নদী ভাঙনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গত কয়েকদিন আগে লঞ্চঘাটের ফেরিঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়েছে তাঁদের। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় কথাকাটির ঘটনাও ঘটেছে।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মোশারফ হোসেন বলেন, পৌরসভার ইজারাকৃত ফেরিঘাটের ইজারাদারদের প্রতিবছর বলে দেয়া হয় সাইনবোর্ড স্থাপন করার জন্য। কিন্তু তাঁরা কওে নি। এবারও সাইনবোর্ড স্থাপন করার কথা বলে দেবো।