শিক্ষাঙ্গন

কাজী জহিরুল ইসলামকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা

মাইন উদ্দিন আহমেদ

কাজী জহিরুল ইসলামকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা

মাইন উদ্দিন আহমেদ

বিজ্ঞজন বলেন, মানুষ চেনা দায় কিন্তু সাহিত্যিকতো অবশ্যই চেনা যায় যদি যিনি চিনতে চান তাঁর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়াশুনা থাকে এবং তিনি আন্তরিক হন। সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে আমি সব সময় যে কোন কবি-সাহিত্যিকের লেখায় গভীর কিছু ব্যঞ্জনা খুঁজে পাবার চেষ্টা করি।

কাজী জহিরুল ইসলাম সাহেবকে আমি পেলাম অতিসম্প্রতি, ওনার ‘স্হবির আঁধারে স্বপ্নসম্ভবা বসন্ত’ কবিতার বইটির মাধ্যমে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠলাম, দুএকটা অনানুষ্ঠানিক কফি বৈঠকও হলো কবি মাহবুব হাসান সহ। আর কয়েকটা বৈঠক হলো অনলাইনে ‘কফি ও কবিতা’ শিরোনামে। সাহিত্যের ক্ষেত্রে একজন সচল-সক্ষম ব্যক্তির সাথে বিলম্বে হলেও পরিচিত হতে পেরে আমার ভালো লাগছে।

কাজী জহিরুল ইসলামের সাহিত্যকর্ম নিয়ে কবি আল মাহমুদ এবং মনজুর আহমেদ সাহেবের লেখা পড়লাম। আমি নিউ ইয়র্কে আসার পর জহিরুল সাহেবের একটা কবিতার বই, কিছু হাইকু, ফেইসবুকে দেয়া কিছু তাজা কবিতা এবং বিভিন্ন দেশের কিছু ঐতিহ্যবাহী রন্ধনকান্ডের বাস্তব বর্ণনা পড়ার সুযোগ পেয়েছি।

ওনার লেখায় আমি ব্যতিক্রম এবং বিশেষত্ব লক্ষ্য করেছি। সেগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, সমগ্র সৃষ্টির সম উৎস উপলব্ধির কাব্যিক প্রকাশ, ইমেজ ম্যানেজমেন্টের নিজস্ব ভঙ্গী এবং রন্ধন প্রনালীকে সাহিত্যমন্ডিত করে খাদ্যের চেয়েও আকর্ষনীয় করে তোলা।

কাজী জহিরুল ইসলাম নামটা পড়তে গেলে মাঝেমাঝে আমি কাজী নজরুল ইসলাম পড়ে ফেলি। যা-ই হোক, নজরুলের কঠিন জীবনের বিপরীতে কাজী জহিরের বিত্ত ও মেধাসমৃদ্ধ জীবনে সাহিত্য সেবার সুযোগ বেশী আছে বিধায় তাঁর সৃষ্টি অধিকতর শাণিত ও ব্যতিক্রমী হয়ে ওঠে।

সাহিত্য কিন্তু বিজ্ঞান নয়, এতে শেষ বলে কিছু নেই। কাজী জহির সাহেবকে কবি ও সাহিত্যিক এই দুই নামেই পরিচয় প্রদান দরকার হয়ে পড়ে। সৃষ্টিঐক্য বিষয়ক উপলব্ধি যেমন এই কবির নিজস্ব এবং বিশেষ একটা উপলব্ধি, তেমনি বিভিন্ন দেশের খাদ্য প্রস্তুত প্রণালী লিখতে গিয়ে তিনি খাদ্য এবং সংশ্লিষ্ট দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে এমনভাবে সিলেটের সাত স্তরের চায়ের মতো লেখাকে সাজিয়ে তোলেন, সেগুলো বই আকারে বেরুলে খুবই পাঠকপ্রিয় হবে বলে আমার মনে হয়।

কাজী জহির সম্পর্কে লিখতে গিয়ে বাংলা কবিতা জগতের সংগ্রামী সৈনিক আল মাহমুদ সাহেব বিজ্ঞ ভঙ্গীতে কিছু উপদেশও সেঁটে দিয়েছেন আন্তরিকতা মেখে। আমি সেরকম কিছু করার দুঃসাহস দেখাবোনা। তবে এটুকুতো অবশ্যই বলবো যে, এখানেই শেষ নয়। সামনে ওনার লিখনী আমাদেরকে আরো অনেক কিছু উপহার দেবে যেগুলো ওনার কাছেই অধিকতর প্রাগ্রসর মনে হবে।

দশই ফেব্রুয়ারী কাজী জহিরুল ইসলাম সাহেবের জন্মদিনে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং আল্লার কাছে এই সাহসী লেখকের জন্য সুস্বাস্হ্য ও দীর্ঘায়ু প্রার্থনা করছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button