পাইকগাছায় মামলার দীর্ঘ ৩৬ বছর পর বিরোধপূর্ণ জমির শান্তিপুর্ণ নিষ্পত্তি।
এ কে আজাদ, পাইকগাছা উপজেলা প্রতিনিধি-(খুলনা)
পাইকগাছায় মামলার দীর্ঘ ৩৬ বছর পর বিরোধপূর্ণ জমির শান্তিপুর্ণ নিষ্পত্তি।
জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দেওয়ানী আদালতে মামলা, অতপর জেলা জর্জ আদালতে আপীল, পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্টে রিভিশন আপীলের মধ্যদিয়ে কেটে গেছে প্রায় দীর্ঘ ৩ যুগ। এরপর হাইকোর্ট রায়ে সর্বশেষ চুড়ান্ত ডিগ্রীর পর স্থানীয় ভাবে কয়েক দফায় সালিসি বৈঠক ও থানা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শান্তিপুর্ণভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে জমিজমা সংক্রান্ত দীর্ঘ বিরোধের। আর এমন ঘটনাটি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের সিলেমানপুর ও বিরাশী গ্রামের।
প্রাপ্ত তথ্যে জানাযায়, পাইকগাছা উপজেলার বিরাশি ও সিলেমানপুর গ্রামে বিরাশী মৌজায় এস এ ২৪৩ নং খতিয়ানের ৮ টি দাগ যথাক্রমে ৬৮৫, ৬৮৬, ৬৮৭, ৬৮৮, ৬৮৯, ৬৯০, ৬৯১, ৬৯২ ও সিলেমানপুর মৌজায় ৯৫৯ দাগ মিলে সর্বমোট ৬৯.৫ একর জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে ১৯৮৫ সালে পাইকগাছা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে জমি মালিক ফকির আলী সরদার ও জহির ওরফে জকির আলী সরদার একটি মামলা করেন।
যার নাং দেঃ ১৫৬/৮৫। উক্ত মামলাটি মহামান্য হাইকোর্টে বিচারাধীন থাকাকালে বিবাদী পক্ষে মোঃ নুরুল ইসলাম খাঁ একই জমিজমা নিয়ে নিন্ম আদালতের স্মরনাপন্ন হন। এবং সেখানে দেওয়ানী ২১৯/১৮ নং মোকদ্দমা দায়ের করেন। সেখানে দীর্ঘ শুনানি অন্তে একই জমিজমা নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে মামলা চলমান থাকায় বিজ্ঞ নিন্ম আদালত মোকদ্দমাটি খারিজ আদেশ দিয়ে বিবাদীর অনুকূলে রায় ডিগ্রী প্রদান করায় সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলার বাদী পক্ষ পুনরায় জেলা জজ, খুলনা ১ ম আদালতে আপীল করেন। যা পরবর্তীতে পুনরায় খারিজ আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত।
এর আগে নিম্ন আদালতের চুড়ান্ত ডিগ্রী লাভের পর ডিগ্রী প্রাপ্ত বদর সরদার গং একটি জারি মোকদ্দমা দায়ের করেন। যার নাং দেঃ ২৩/১১। যা শুনানি অন্তে বিজ্ঞ জারি পক্ষে রায় ডিগ্রী প্রদান করেন। কিন্তু এতকিছুর পরও থেমে থাকেননি মামলাবাজ সবুর খাঁ গং। তিনি নিন্ম আদালতে হেরে গিয়ে পুনরায় জেলা জজ আদালতে আপীল রিভিশান দায়ের করেন। যার নাং ১৫/১৯। সেখানেও বিজ্ঞ আদালত আপীল রিভিউশানটি খারিজ করেন।
এরই মধ্যে কেটে গেছে দীর্ঘ ৩৬ টি বছর। দীর্ঘ আইনী লড়াই শেষে আদালতে রায় ডিগ্রী বাস্তবায়নে সচেষ্ট ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বর, গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও থানা প্রশাসন। মুল মামলার বাদী পক্ষের মোঃ কামাল সরদার জানান, বিষয়টি দীর্ঘদিনের লড়াই শেষে আদালত আমাদের পক্ষে রায় প্রদান করেছে।
তবে এই দীর্ঘদিন আইনী লড়াইয়ে আমাদের অনেক আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। অবশেষে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বর ও স্থানীয় প্রশাসন রায় ডিগ্রী বাস্তবায়ন করে দিয়েছেন। আমরা আমাদের ন্যায় সঙ্গত দাবী রক্ষা করতে পেরেছি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পক্ষে কোন ক্ষতি পুরণ দাবি করবেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরোও বলেন, আমরা অবশ্য ক্ষতিপুরণ চেয়ে আদালতের স্মরনাপন্ন হবো।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার বোয়ালিয়া হিতামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামলার অন্যতম প্রতিপক্ষ। তিনি স্কুল ফাঁকি দিয়ে এরূপ মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা করে মানুষকে হয়রানী করতেন। যা নিয়ে স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া বিগ্ন সৃষ্টি হতো। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী তার এহেন কর্মকান্ডের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপও কামনা করেন।