জেলার খবর

দুই বছরের শিশুর মুখে পানির কথা শোনে কান্না করল পথচারী।

এম. আবদুল হাকিম, বান্দরবান সংবাদদাতা-ঃ

দুই বছরের শিশুর মুখে পানির কথা শোনে কান্না করল পথচারী।

পানির অভাবে মৃত্যুর মুখে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম রেজুর মানুষ, অতিশীঘ্রই সরকার ব্যবস্থা না নিলে হারাতে পারে শতশত প্রাণ, দাবি সচেতন মহলের।

গত সোমবার ( ২৫ মে) মংজয় পাড়া কিনাধন বাড়ির টেক রাস্তার উপর এক পথচারী ২বছরের শিশুর মূখে শোনতে পেল পানি পানি। পথচারী বুঝতে পারল শিশুটি পানির পিপাসায় কাতর হয়েছে। পথচারী পিপাসিত (তৃষ্ণার্ত) শিশুর জন্য পাশে কোথায় পানি না পেয়ে ০০.৫ কিলোমিটার শিশুটিকে কোলেকরে পথ অতিক্রম করিয়ে পানি পান করালেন আহম্মদ কবির।

পানির অপর নাম ‘জীবন’ হলেও পার্বত্য বান্দরবান ঘিরে রয়েছে পাহাড় আর পাহাড়। আর পাহাড় ঘিরে রয়েছে হাজারো বসতি। পার্বত্য অঞ্চলে এমন কিছু জায়গা রয়েছে গ্রীষ্মকাল আসার আগে শুকিয়ে যায়। যার ফলে হাজার হাজার অধিবাসী পানির অভাবে দিন কাটাতে হয়। এমনি অনেক ঘটনা পাওয়া যায় পানির অভাবে মারা গেছে গরু, ছাগল, পাহাড়ি জন্তুজাত।

দেখা গেছে যে, প্রায় ২,৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পানি সরবরাহ করতে হচ্ছে পার্বত্য বান্দরবান জেলা নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম রেজুর মানুষের। এমনও দেখা গেছে সকাল বেলা কলসি নিয়ে ২,৩ কিলোমিটার পায়ে হেটে গিয়ে পানি সরবরাহ করতে হয়, আর বিকাল বেলা ফিরতে হয় পানিবিহীন শূন্য হাতে, মিলছে না ঔষুধ সেবন করারও পানি। গভীর নির্জন স্থানে পাহাড়ের তলদেশে গভীর মাটি খনন করে সারাটা দিন অপেক্ষা করার পরেও কেউ ফিরছে পানি নিয়ে আর অন্য কেউ ফিরছে পানি ছাড়া শূন্য হস্তে।

আরোও জানা যায়, এক কলসি পানির জন্য সুদূর নলকূপের পাশে গিয়ে ভোরবেলা থেকে অপেক্ষা করে সন্ধায় বাড়িতে ফিরে যেতে হচ্ছে পানি ছাড়া। ৩৫০-৪০০ পরিবারের জন্য মাত্র পানির ব্যবস্থা ৩/৪টি নলকূপ (টিপকল) ( তা হচ্ছে মরহুম আবদুস শুক্কুর টিপকল , পুরুক্ষা তংচংগ্যা জায়গায় , হায়দার আলী কোম্পানির ও হেডম্যান বাড়ির পাসে নলকূপ) । গ্রীষ্মকালীন মাঝামাঝি মৌসুম উল্লেখিত নলকূপ গুলোও শুকিয়ে যায়। শুকিয়ে যাওয়াতে আরোও কষ্টে দিন কাটাতে হয় এলাকাবাসীর।

এমনি ঘটনা ঘটে যাচ্ছে বান্দরবান জেলাধীন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ঘুমধুম ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মংজয়পাড়া, বড়ইতলী পাড়া, ভালুকিয়া পাড়া, জামিরতলী পাড়া ও পার্শ্ববর্তী আরো অনেক এলাকায় । গ্রীষ্মকালীন পানির অভাবে জীবন যাপন করছে অত্র এলাকার বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন যাবত পানির সংকট বিরাজ করছে পুরো এলাকা জুড়ে। অতিশীঘ্রই সরকার যদি কোন ব্যবস্থা না নেই তাহলে পানির অভাবে মারা যেতে পারে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি এবং জঙ্গলে থাকা শত শত প্রাণী, অনেক শিশু, বৃদ্ধা,গর্ববতী মা ও বোনেরা। এমন ধারণা করছে এলাকার সচেতন মহল।

ইউপি সদস্য বদিউল আলম জানান, আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ পানি নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এবং অনেক জন্তুজাত পানির অভাবে মারাও যাচ্ছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ শফিউল্লাহ জানান, আমরা বিষয়টি নিয়ে অবগত আছি, ইতোমধ্যে জন-প্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেছি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অবগত করেছি। আমার ধারণা পানির ব্যাপারে যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে কর্তৃপক্ষ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button