ধামরাইয়ের খাগাইল গ্রামে সাধক পূরুষ অমৃত ভক্তের ১৭২ তম বার্ষিক উৎসব স্বল্পপরিসরে উদযাপন।
রনজিত কুমার পাল (বাবু)স্টাফ রিপোর্টারঃ
ধামরাইয়ের খাগাইল গ্রামে সাধক পূরুষ অমৃত ভক্তের ১৭২ তম বার্ষিক উৎসব স্বল্পপরিসরে উদযাপন।
ঢাকার ধামরাই উপজেলার বাইশান্দা ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী ঁঅমৃত লাল ভক্তের ১৭২তম উৎসব সরকারের স্বাস্থ্য বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমণ এড়াতে স্বল্পপরিসরে উদযাপিত হয়েছে।
রাধাকৃষ্ণের অষ্টকালীন লীলা কীর্তন শেষে সোমবার(১৬ই নভেম্বর) বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে নৌকাবিলাস উৎনব। অমৃত ভক্তের বৃহৎ পুকুরে রাধা কৃষ্ণের আদলে সাজিয়ে দুই শিশুকে নৌকায় চড়িয়ে চারিপাশ ঘোরানো হয়। কাসর -ঘন্টা ও ঢাক ঢোলের তালে তালে উপস্থিত হাজারো আগত ভক্তবৃন্দরা উলুধ্বনিতে মুখরিত করে তুলে উৎসব স্থল।
ধামরাইয়ের বাইশাকান্দার খাগাইল গ্রামে সাধক পূরুষ অমৃত ভক্তের ১৭২ তম বার্ষিক সপ্তাহ ব্যাপী উৎসব-২০২০ এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে ১১ নভেম্বর থেকে।
বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাব এর কারনে এবার আয়োজন সম্পুর্ন ভিন্ন ভাবে পালিত হয়েছে। বৃহৎ পরিসরে মেলা স্থগিত রেখে শুধু মাত্র ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উৎসবে আগত সকল ভক্তদের মুখে মাস্ক ব্যবহার করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উৎসব টি পালন করতে হয়েছে। এবার কীর্তন অনুষ্ঠানে ভক্ত আলিঙ্গন প্রথা বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবার ভক্ত দর্শনার্থী সমাগম অনেক কম হয়েছে। প্রতিদিন প্রসাদ বিতরনেও সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
সোমবার (বিকেলে নৌকাবিলাস উৎসব পরিদর্শনে আসেন ঢাকা-২০ ধামরাই আসনের মানণীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ও বায়রা’র সভাপতি জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বেনজীর আহমদ ও বাইশাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা সহ অন্যন্য নেতৃবৃন্দ।
সংক্ষিপ্ত এক আলোচনায় আলহাজ্ব বেনজীর আহমদ এমপি বলেন এবার স্বল্প পরিসরে ভক্তের উৎসব হলো করোনা থেকে মুক্তি পেলে আবার বৃহৎ পরিসরে আনন্দঘন উৎসব হবে। তিনি সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন সবাই করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমণ এড়াতে সবাই সচেতন থাকবেন। কারন এর ঔষধ এখনো বের হয়নি একমাত্র সচেতনতা ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে এর সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব। সামাজিক দুরত্ব মেনে ও মুখে মাস্ক পরে ঘরের বাইরে বের হবার আহ্বান জানান।এর পর এমপি উৎসব কমিটির কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করে খোঁজ খবর নেন।
১৮ নভেম্বর বুধবার সকাল থেকে অনুষ্ঠিত হয় শ্রী মদ্ভাগবত গীতাপাঠ। দুপুরে চৌদ্দমাদল অনুষ্ঠান সহ তারক ব্রহ্ম নাম বিতরন, কুঞ্জ ভঙ্গ এবং ধর্মসভা শেষে ,ভক্তকুন্ড প্রদক্ষিন ও মোহন্ত বিদায়ের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সপ্তাহ ব্যাপী “অমৃতভক্তের এই বাৎসরিক উৎসব।
গত ১১ নভেম্বর গভীর রাত থেকে দেশ ও জাতির মঙ্গলার্থে মহামানব“অমৃত ভক্তের” ১৭২ তম উৎসব শুরু হয়েছে। প্রার্থনায় ব্রতী হয়েছে আগত ভক্তবৃন্দ।
অমৃতলাল ভক্তের আশ্রম ও এই বৃহৎ পুকুর পার ঘীরেই মূলতঃ সপ্তাহব্যাপী এই উৎসব। কথিত রয়েছে আগত ভক্তরা নানা রোগ নিরাময় ও শান্তির প্রত্যাশায় অমৃতলাল ভক্তের এই বৃহৎ পুকুরে স্নান কার্য় সম্পন্ন করে থাকে মুক্তি পাবার আশায়।
ঢাকার অদুরে ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নের খাগাইল অমৃত ভক্তের পুকুর পার এখন এক তীর্থ স্থানে পরিণত হয়েছে। ১৭২ বছর পূর্বে সাধক পূুরুষ অমৃত লাল ভক্ত মূূলতঃ ধর্মীয় চেতনায় সপ্তাহ ব্যাপী এই উৎসব ও তার মেলার গোড়া পত্তন করেছিলেন। কালের বির্বতনে আজ সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতিতে এই উৎসব হয়ে উঠেছে সার্বজনীন। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে মেলাঙ্গন হয়ে উঠেছে কোলাহল মূখর।
সপ্তাহব্যাপী এ উৎসবে আগত ভক্তবৃন্দের জন্য শত মন চাল-ডাল রান্নার আয়োজন করা হয় প্রতিবার করোনার কারনে সংক্ষিপ্ত করা হয় বলে জানান কমিটির পক্ষ থেকে উৎসব কমিটির সভাপতি ও খাগাইল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন বৈশ্বিক মহামারী নোভেল করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমণ এড়াতে আমরা সরকারের স্বাস্থ্য বিধি মেনে প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে স্বপ্নপরিসরে এবারের উৎসব উদযাপন করেছি।