চাটখিল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ।
স্বপন পাটওয়ারী, চাটখিল উপজেলা প্রতিনিধি-(নোয়াখালী)
চাটখিল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ।
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের অবহেলায় আইমান হোসেন নামে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ১০ মাস বয়সী শিশু আইমান হোসেন পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড ভীমপুর গ্রামের সুজনের ছেলে। রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যায় শিশুটি।
নিহতের বাবা সুজন অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে আইমান নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় গত শুক্রবার দুপুরে চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরপর একজন চিকিৎসক এসে বাচ্চাকে দেখে যাওয়ার পর আর কোন চিকিৎসক আসেননি।
রবিবার দুপুরে আইমান বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের ডাকেন। কিন্তু হাসপাতালে কেউ না থাকায় কারো সহযোগিতা পাননি। বিকাল তিনটার দিকে হাসপাতালের নিচে গিয়ে একজন নার্সকে পাওয়ার পর তাকে দেখালে তিনি জানান, বাচ্চার অক্সিজেন ও নেবুলাইজার লাগবে।
হাসপাতালে অক্সিজেন আছে কিনা জানতে চাইলে কিছু না বলে নার্স চলে যান। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে আইমান মারা যাওয়ার পর নার্স এসে মৃত আইমানকে অক্সিজেন লাগিয়ে দেন।
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসকরা হাসপাতালে নিয়মিত থাকেন না। মাঝে মধ্যে এলেও দুপুরের পর তাদের আর হাসপাতালে পাওয়া যায় না। কয়েকজন চিকিৎসক হাসপাতালে না এসে পাশের রামগঞ্জে গিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে চেম্বার করেন। চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় আইমান মারা গেছে।
স্থানীয়রা বলছে, সন্ধ্যার পর নিহতের স্বজনরা হাসপাতালে এসে হামলার চেষ্টা করলে কর্তব্যরত নার্স ও কর্মচারীরা পালিয়ে যান। এসময় তারা হাসপাতালের কিছু আসবাপত্র উল্টে ফেলে দেন।
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে নিহত শিশুর স্বজনদের ভিড় ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, তিনি নিয়মিত হাসপাতালে আসেন। এছাড়াও দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল চিকিৎসক ও নার্সরাও হাসপাতালে থাকেন। হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন রয়েছে। চিকিৎসক বা নার্সের অবহেলায় শিশুটির মৃত্যু হয়নি।
এ ঘটনায় রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন।