মাদকের কালো থাবা সীমান্তে, দিশেহারা শার্শা বেনাপোলের সীমান্তবাসী।
এসএম স্বপন, বেনাপোল প্রতিনিধি-(যশোর)
মাদকের কালো থাবা সীমান্তে, দিশেহারা শার্শা বেনাপোলের সীমান্তবাসী।
মাদকের কালো থাবায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে যশোরের শার্শা-বেনাপোল সীমান্তবাসী। কোনভাবেই রোধ করা যাচ্ছে ভারত থেকে মাদকের চালান আসা। আবার পক্ষান্তরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে মূল্যবান সোনা ও ইলিশের চালান। আর বিনিময়ে বাংলাদেশবাসী পাচ্ছে সর্বনাশা মাদক। সেই সাথে থেমে নেই আগ্নেয়াস্ত্র সহ বৈদেশিক মুদ্রা পাচার।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত এক বছরে বিজিবির কঠোর নজরদারিতে এ সীমান্তের কেবল ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির হাতেই মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রাসহ দেড়শো কোটি টাকার অধিক চোরাচালান পণ্য আটক হয়েছে। এর মধ্যে কেবল ফেনসিডিলই রয়েছে ২২ হাজার বোতল। এসময় পাচারের সাথে জড়িত ২০৩ জনকেও আটক করা হয়। তারপরেও থামছে না চোরাচালান।
সচেতন মহল বলছেন, শুধু আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রচেষ্টায় মাদক পাচার রোধ করা কঠিন। যেহেতু ভারত থেকে মাদক আসছে তাই সীমান্তরক্ষী বিএসএফের আন্তরিক সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।
আর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছেন, তারা সব ধরনের পাচার রোধে আন্তরিক হয়ে কাজ করছেন।
দেখা যায়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায়, অল্প সময়ে ধনী হওয়ার আশায় অনেকে এ পথে বিভিন্ন পণ্যসহ মাদক পাচারের সাথে জড়িয়ে পড়ছে।
তারা যেমন ভারত থেকে দেশে ঢোকাচ্ছে ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা, আগ্নেয়াস্ত্র, বিভিন্ন প্রকার আমদানি নিষিদ্ধ ঔষধ সহ নানা ধরনের চোরাচালানী পণ্য।
তদরুপ, দেখা যাচ্ছে পাচারকারীরা ভারতে পাঠাচ্ছে মূল্যবান সোনার বার, ইলিশ মাছ সহ বিভিন্ন প্রকার পণ্য।
ফলে, মাদক-আগ্নেয়াস্ত্র বাংলাদেশে প্রবেশের কারণে দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে বেশি। যুব সমাজ সহ উঠতি বয়সী ছেলেরা জড়িয়ে পড়েছে নেশার জগতে। আর তাতে করে শঙ্কায় রয়েছে সীমান্তবাসী। তাদের অভিযোগ, এবিষয়ে এখনি কঠোর পদক্ষেপ না নিলে, চরম মূল্য দিতে হবে দেশকে।
সীমান্তবাসী আজিজুল জানান, যেহেতু দেশের সিংহভাগ মাদক শার্শা-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে। তাই এ সীমান্তে আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে বিজিবি, পুলিশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে হবে।
বেনাপোল পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক শুকুমার দেবনাথ জানান, সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে মাদকের বড় বড় চালান ঢুকছে দেশে। এতে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় আছি। প্রতিবেশী দেশের সীমান্তরক্ষী ও রাষ্ট্র আন্তরিক না হলে শুধু বিজিবির পক্ষে মাদক পাচার রোধ কঠিন।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের জামিন বিলম্বিত করা গেলে মাদকপাচার প্রতিরোধে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে।
যশোরের নাভরণ সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান জানান, তারা ইতিমধ্যে মাদক পাচারকারীদের তালিকা করে আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।
৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম রেজা বলেন, ভারত থেকে মাদক এসে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের অভ্যন্তরে। সবার সহযোগিতা পেলে খুব শিগগিরই পাচার কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
উল্লেখ্য,শার্শা-বেনাপোল সীমান্তে প্রতিদিনই মাদক সহ বিভিন্ন চোরাচালানী পণ্য আটক হচ্ছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। আর পক্ষান্তরে দেখা যাচ্ছে চোরাচালানী আটকের সংখ্যাও গড়ে দিনপ্রতি ১ জন করে চোরাচালানী। দেখা যায় এসব চোরাচালানী আইনের ফাঁক গলিয়ে নিজেদেরকে বহনকারী পরিচয়ে বেরিয়ে এসে আবার জড়িয়ে পড়ছে পাচারের সাথে।