বেনাপোল বন্দরে গত অর্থবছরে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৫ মেট্রিক টন বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রফতানি
যশোর প্রতিনিধিঃ
বেনাপোল বন্দরে গত অর্থবছরে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৫ মেট্রিক টন বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রফতানি
বিদায়ী অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ভারতে পণ্য রফতানি বেড়েছে। বেনাপোল বন্দরে বিদায়ী অর্থবছরে ৮ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা মূল্যের ৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৫ মেট্রিক টন বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রফতানি হয়েছে। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে এ বন্দরে রফতানির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯ মেট্রিক টন। সে তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে এসে রফতানি বেড়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩৪৪ মেট্রিক টন।
বিদায়ী অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে ভারতে পণ্য রফতানি বেড়েছে।
জানা যায়, করোনাকালে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সরকারের নির্দেশে বন্দর ও কাস্টমস নিরলস ভাবে ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করায় এই বিপুল পরিমাণে পণ্য ভারতে রফতানি সম্ভব হয়েছে দাবি সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
এদিকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সামনের বছরগুলোয় রফতানি আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীরা। তবে রেলযোগে রফতানি বাণিজ্য চালু করতে পারলে এবং নিরলস বাণিজ্য সম্পাদনে যে সকল প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা দ্রুত নিরসনের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশি পণ্যের মান ভালো হওয়ায় ভারতে এর কদর বেড়েছে উল্লেখ করে রফতানিকারক তৌহিদুর রহমান বলেন, এ যাবত কালে ভারতে সবচেয়ে বেশি পণ্য গেল অর্থবছরে রফতানি হয়েছে। রফতানি বাড়ায় দেশে মানুষের কর্মসংস্থানও বেড়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় সামনের দিনে রফতানি আরও বাড়বে। এদিকে রেলযোগে ভারতে পণ্য রফতানি করতে পরিবহন ব্যয় কমে আসার বিষয়ে বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, প্রতিদিন রেলযোগে ভারত থেকে পণ্য আসছে। পরে বন্দরে পণ্য খালাস করে খালি বগি নিয়ে কলকাতায় ফেরত যায়। যদি রেলযোগে রফতানি পণ্য পরিবহন করা যায় তবে বাণিজ্য সহজ ও খরচ কমে আসবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওপারে রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক তল্লাশিতে দীর্ঘ সময় ক্ষেপন করা হয়। সেই সঙ্গে জায়গারও সংকট রয়েছে। এতে সব ট্রাক ভারতে ঢুকতে পারে না। এক্ষেত্রে সময় কমিয়ে যদি দ্রুত তল্লাশি করা হয় এবং বন্দরে জায়গা বৃদ্ধি করা হয় তবে রফতানির পরিমাণ বাড়বে। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক বন্দরে কার্যক্রম পরিচালনা করার বিষয়ে বেনাপোল বন্দরের উপ-উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে করোনা সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বন্দর চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। এতে সরকারি ছুটির দিনেও বন্দর খোলা রেখে কাজ করছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে দেড় লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি পরিমাণ পণ্য ভারতে রফতানি সম্ভব হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওযার পর বাণিজ্য আরও গতিশীল হয়েছে।
এছাড়া পণ্য পরিবহনে ওপারে যেসব জটিলতা রয়েছে, তা নিরসনে ইতিমধ্যে আলোচনা করে সন্তোষজনক কিছু সমাধানও এসেছে বলে জানান তিনি। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা পদ্মা সেতুর সুফল পেতে শুরু করেছেন। সপ্তাহে ৭ দিনে ২৪ ঘণ্টা কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাণিজ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে সড়ক পথের পাশাপাশি রেলযোগে ভারতের সঙ্গে আমদানি বাণিজ্য চলছে। এখন রেলযোগে রফতানি বাণিজ্য চালু হলে বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে।
রেলযোগে রফতানির বিষয়ে ভারত থেকে প্রস্তাব এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা বিষয়টি দেখছেন।