অর্থ ও বাণিজ্য

সরকার সার্বিক ভর্তুকি ব্যয় নিয়ে চিন্ততি, আগামী সপ্তাহে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব

গত ২২ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটি’র বৈঠকে অর্থ বিভাগ থেকে দাম সমন্বয়ের প্রস্তাব দেওয়ার ভিত্তিতে এলএনজিতে ভর্তুকি সামাল দিতে জ্বালানি তেলের পর এবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পেট্রোবাংলা থেকে নির্দেশনার মাধ্যমে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো এই প্রস্তাব তৈরির কাজ শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহেই কোম্পানিগুলো প্রস্তাব জমা দেওয়া শুরু করতে পারে বলে এক সূত্রে জানা গেছে।

ওই সভায় বলা হয়, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারের দাম সমন্বয় বা বৃদ্ধি করা না হলে বাজেটে ভর্তুকি ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। যার পরিমাণ হতে পারে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ২ শতাংশ। ফলে টাকার অঙ্কে ভর্তুকি ব্যয় বাজেটে প্রক্ষেপণের চেয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই সরকারের উচিত ২০২২ সালের শুরুতে এসবের দাম সমন্বয় করা। অন্ততপক্ষে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম দ্রুত বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয় সেই সভায়।

সভায় আরো বলা হয়, সরকার সার্বিক ভর্তুকি ব্যয় নিয়ে চিন্তায় আছে। এই ভর্তুকি কমানোর জন্য বিদ্যুৎ, সার ও গ্যাসের দাম সমন্বয় (বৃদ্ধি) করার প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে বাজেটের ওপর চাপ বেড়ে যাবে। আর্থিক খাত একটি বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়তে পারে। তাই সারের দাম না হলেও গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম যেন আগামী বছরের শুরুতেই অর্থাৎ চলতি বছরের শুরুতেই সমন্বয় করা হয়।

এদিকে তিতাসের একজন কর্মকর্তা বলেন, তারা পেট্রোবাংলার নির্দেশনায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব তৈরি করছে। রবিবার নাগাদ সেটি কমিশনে জমা দেওয়া হতে পারে। একইসঙ্গে তারা মার্জিন বৃদ্ধির প্রস্তাব দেবে। প্রতি ঘনমিটারে ৫৪ পয়সা মার্জিন বৃদ্ধির প্রস্তাব দেবে বলে জানিয়েছে তিতাস।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বাড়ছে। গত অক্টোবরের দিকে ভারত প্রায় ৬২ ভাগ গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। আমরা সে তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছি। যে কার্গো আমাদের আগে ছিল ১০ ডলার পার এমএমবিটইউ (ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট), সেখানে এখন তা ২৮ থেকে ৩০ ডলারে উঠে গেছে। প্রায় তিনগুণ বেড়ে গেছে। আন্তর্জাতিক দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের দাম বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, পেট্রোবাংলা এবার নিজে নয়, কোম্পানিগুলো যার যার মতো দামের প্রস্তাব জমা দেবে কমিশনের কাছে।

এর আগে গত ৩ নভেম্বর জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে সরকার। লিটারপ্রতি ডিজেল ও কেরোসিন ১৫ টাকা বৃদ্ধি করা হয়। গ্যাসের দামের পর গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন খরচও বাড়বে। সে হিসেবে আগামীতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবও দিতে পারে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button