প্রবাসে বাংলা

ডালাস বাংলা উৎসবে পুরস্কৃত হলেন কাদেরী কিবরিয়া ও কাজী জহির

মাইন উদ্দিন আহমেদঃ

ডালাস বাংলা উৎসবে পুরস্কৃত হলেন কাদেরী কিবরিয়া ও কাজী জহির

আমেরিকায় ডালাসের আর্ভিং আর্ট সেন্টার সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় হয়ে উঠেছিল এক টুকরো রঙিন বাংলাদেশ। রঙবেরঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া পরিহিত বাঙালিদের পদচারণায় সেজেছিলো হেমন্তের সেই সন্ধ্যা। হাইওয়ের ওপর বিলবোর্ডে ঝকঝক করছিলো ‘ডালাস বাংলা উৎসব’লেখাটি।

উৎসব প্রাঙ্গনে বিভিন্ন আয়োজনের মাঝে দেখা গেলো এক ভদ্রলোক নিজের লেখা গ্রন্থে সই করে তুলে দিচ্ছেন ক্রেতাদের হাতে। তিনি হলেন, সাহিত্য ও শিল্পের নানাবিধ ক্ষেত্রে বিচরনকারী এক ব্যক্তিত্ত্ব, নাম যার কাজী জহিরুল ইসলাম।

সন্ধ্যা ছয়টায় সানাম টিভির প্রযোজক সাবেরা কাদের-এর ঘোষনায় শুরু হয় ডালাস বাংলা উৎসব। সতেজ শিল্পীদের গান, কবিতা ও নাচ উপভোগ করেন অনুষ্ঠানে যোগদানকারী দর্শকবৃন্দ।

শুরুতেই ঐশী ‘কফি হাউজের আড্ডাটা’ গেয়ে দর্শকদের মন জয় করে নেয়। দুই ভাই আলভি ও জারিফ পরিবেশন করে ‘রাঙামাটির রঙে’। ওয়াফি গায় ‘আমি তোমাকেই বলে দিব’। নোভা এবং নোরা দ্বৈত নাচ প্রদর্শন করে ‘আজ ধানের ক্ষেতে’ রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে। অহনা জয় গোস্বামীর ‘মেঘবালিকা’ কবিতা আবৃত্তি করে তাক লাগিয়ে দেয়। শিশু-কিশোরদের পর্বে দর্শকদের সবচেয়ে মুগ্ধ করে তাহিয়া। ভারতনাট্যমের নৃত্য-মূর্ছনাগুলো ছিল দেখার মত। ডালাসের স্থানীয় বাঙালি শিল্পীরা অসাধারণ গান করেন এবং কবিতা আবৃত্তি করেন। এ-পর্যায়ে গান করেন ফারহানা হোসেন লিপি, মাফিয়া রহমান, লিমন রশিদ, নাসরীন রেজা এবং জসীম উদদীনের নিমন্ত্রণ কবিতা আবৃত্তি করেন সাবিরা কেয়া।

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন সম্মানিত অতিথি কবি কাজী জহিরুল ইসলাম। তিনি নিজের লেখা চারটি কবিতা আবৃত্তি করে শোনান। কবিতার ফাঁকে ফাঁকে অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ গাদ্যিক নিবেদন সবার মাঝে এক ব্যতিক্রমী আবেদন সৃষ্টি করে।

দাম্পত্য সুসম্পর্কের সুফল ব্যাখ্যা করে কবি তাঁর স্ত্রী মুক্তি জহিরকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানিয়ে ‘বাড়ি আছো’ কবিতাটি স্ত্রীর হাত ধরে পাঠ করে এক অন্যরকম আবেদন সৃষ্টি করেন।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, রবীন্দ্র সঙ্গীতের কিংবদন্তী গায়ক কাদেরী কিবরিয়া তাঁর দরদমাখা সেই ঐতিহ্যবাহী কণ্ঠের সুরেলা আবেদনে আচ্ছন্ন করে জয় করে নেন সবার অনুভূতি।

সানাম টিভির প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী প্রযোজক খন্দকার তৌফিক কাদের পূর্ব ঘোষিত ‘স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ২০২১’ তুলে দেন কন্ঠশিল্পী কাদেরী কিবরিয়া এবং কবি কাজী জহিরুল ইসলামের হাতে। পুরস্কৃত অন্য আরেকজন ড. নুরুন নবী আসতে না পারায় তাঁর পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহন করেন জালাল আহমেদ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ফারহানা রেজা যিনি একটি কবিতাও আবৃত্তি করেন।

দর্শনীর বিনিময়ে আয়োজিত হলেও ‘ডালাস বাংলা উৎসব’ স্পর্শ করেছে সবার হৃদয়। ফলাফলে তৃপ্ত আয়োজকবৃন্দ প্রত্যাশা করছেন এখন থেকে প্রতি বছর ‘সানাম টিভি’ ডালাসে এই উৎসব অব্যাহত রাখবে।
***

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button