আন্তর্জাতিক

ভারতে মোদির জন্মদিনে দেওয়া হবে দেড় কোটি টিকা

একাত্তর পূর্ণ করে বাহাত্তরে পা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামীকাল শুক্রবার। সেই সঙ্গে পূর্ণ হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রিত্বের দুই দশক। বিজেপির শীর্ষ নেতারা ঠিক করেছেন, জন্মদিন স্মরণীয় করে রাখতে ১৭ সেপ্টেম্বর দেশে মোট দেড় কোটি মানুষকে কোভিডের টিকা দেওয়া হবে। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘ জানিয়েছেন, সব রাজ্যে দলীয় স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবীদের এই লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চলতি মাসেই দৈনিক এক কোটি টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছে ভারত। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের দিন তা দেড় কোটিতে নেওয়ার জন্য যা যা করণীয়, এক মাস ধরে বিজেপি নেতৃত্বের নজর সেদিকেই। সে জন্য ২ লাখ গ্রামের ৪ লাখ স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এযাবৎ সেই প্রশিক্ষণ পেয়েছেন ৬ লাখের বেশি স্বেচ্ছাসেবী। তবে শুধু কোভিডের টিকাই নয়, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২১ দিন দেশের সর্বত্র বিজেপি বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যার মধ্য দিয়ে মোদির নেতৃত্ব ও সরকারের ‘সাফল্য’ প্রচার করা হবে।

এই ২১ দিন ধরে আয়োজন করা হবে ‘মোদি মেলা’, ‘মোদি কুইজ প্রতিযোগিতা’, স্বচ্ছতা অভিযানের। বয়স যেহেতু ৭১, দেশের ৭১টি নদীকে সে জন্য বাছা হয়েছে সাফসুতরো করার জন্য। উত্তর প্রদেশ দিয়ে প্রবাহিত গঙ্গার ৭১টি এলাকা চিহ্নিত হয়েছে পরিষ্কার করার জন্য। রাজ্যে রাজ্যে আয়োজন করা হবে রক্তদান শিবিরের। বের করা হবে সরকারের সাফল্যের খতিয়ানের ট্যাবলো। প্রকাশিত হবে সে-সংক্রান্ত পুস্তিকা। আয়োজন করা হবে প্রদর্শনী ও ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভার।

জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি ধন্যবাদ জানিয়ে পাঠানো হবে ৫ লাখ পোস্টকার্ড। শহরে তো বটেই, হাইওয়েতে টাঙানো হবে হাজার হাজার হোর্ডিং, যাতে লেখা থাকবে বিনা মূল্যে টিকা ও খাদ্য সরবরাহের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। কোভিডের দরুন এক বছর ধরে সরকারকে নানা রকম সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। বিশেষ করে দরিদ্র মানুষেরা কর্মহীন হয়ে যাওয়ায়।

এই মানুষজনকে সাহায্যের জন্য সরকার বিনা মূল্যে রেশন দিচ্ছে। সে জন্য রেশন দোকান থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি আঁকা ও দরিদ্রবান্ধব সরকারের সাফল্যের কাহিনি লেখা থলে বিলি করা হবে। বিজেপির একাংশের দাবি, কম করে ১৪-১৫ কোটি থলে বিলি করা হবে, যার মাধ্যমে ৬০ থেকে ৭০ কোটি মানুষের কাছে প্রধানমন্ত্রীর ‘সাফল্যকে’ পৌঁছে দেওয়া যাবে। এই বাবদ সরকার ও দলের কোষাগার থেকে খরচ হবে আনুমানিক ৩ হাজার কোটি রুপি। বিরোধীরা বলছে, এই প্রচার দিয়ে সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা চাপা দেওয়া যাবে না। এর বদলে পেট্রল-ডিজেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমাতে প্রধানমন্ত্রীর সচেষ্ট হওয়া উচিত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button