বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেধা সম্পদ ছিলেন বঙ্গবন্ধু
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু একটা থেকে আরেকটা আলাদা করা যায় না। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেধাসম্পদ ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাংলাদেশের ডিজাইন করেছেন, দিয়েছেন পেটেন্ট। বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বড় ডিজাইনার আর কেউ নাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্ন, ডিজাইন ও নির্দেশনা দিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তাঁরই কারণে বাংলাদেশ হলো, একটি জাতি হলো এবং একটি মানচিত্রের জন্ম নিলো। বঙ্গবন্ধু’র সুযোগ্য উত্তরাধিকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে আমরা আজকের জায়গায় এসে পৌঁছেছি। কোভিডকালীন সময় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে জীবন ও জীবিকা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যেও আমাদের কোনো কিছু বন্ধ হয়ে যায়নি, সংকিত হয়ে যাইনি এমনকি থেমেও যায়নি। আমাদের শিল্প ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস্ অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) উদ্যোগে আয়োজিত “জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মেধাসম্পদ” শীর্ষক সেমিনার এবং বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২১ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আজ এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাননীয় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ডিপিডিটি’র ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো: ওবায়দুর রহমান। মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব লুৎফুন নাহার বেগম এবং মো: সানোয়ার হোসেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিপিডিটি’র রেজিস্ট্রার মো. আবদুস সাত্তার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সৃজনশীলতার প্রতিযোগীতায় এগিয়ে যেতে হলে দেশের সফল গবেষক, প্রযুক্তিবিদ, শিল্পপতি, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মেধাসম্পদ সংরক্ষণ এবং এর যথাযথ ব্যবহারে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু অনেক আগেই উপলব্ধি করেছিলেন দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতির উন্নয়নের জন্য মেধাসম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। মেধাসম্পদকে সংরক্ষণ ও কাজে লাগাতে হলে এর গুরুত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে, গবেষণা বাড়াতে হবে, ট্রেনিং বাড়াতে হবে এবং সবাইকে সচেতন হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শিল্পসচিব বলেন, সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমেই কেবল একটি দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব। এজন্য মেধাসম্পদের যথাযথ ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মাধ্যমেই সীমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। আর এ লক্ষ্যে মেধা সম্পদ সংরক্ষণে অগ্রণী প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস্ অধিদপ্তর তথা শিল্প মন্ত্রণালয় এক সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
ডিপিডিটি’র রেজিস্ট্রার বলেন, পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস্ অধিদপ্তর মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। স্বাধীনতার পরবর্তী সয়য়ে আমরা ৬ হাজার ২১টি পেটেন্ট সনদ, ১৮ হাজার ৪৯৮টি ডিজাইন সনদ এবং ৬২ হাজার ৬০৯টি ট্রেডমার্কস্ নিবন্ধন সনদ প্রদান করেছি। আমরা বাংলাদেশের ইলিশ, জামদানি, ঢাকাই মসলিম, খিরসাপাত আম, চিনিগুড়া ও কাটারীভোগ চাল, শতরঞ্জি, রাজশাহী সিল্ক এর ভৌগোলিক পণ্যের নিবন্ধন সনদ প্রদান করেছি। এছাড়াও আমরা অনলাইন সেবা চালু করেছি, যার মাধ্যমে সেবাগ্রহীতা এখন ঘরে বসে নিবন্ধন সেবা নিতে পারছে।
পরে মন্ত্রী পেটেন্ট, ডিজাইন, ট্রেডমার্কস্ এবং ভৌগোরিক নির্দেশক পণ্যের (জিআই) সনদ প্রদান করেন। ‘পেটেন্ট’ এ বিজয় ডিজিটালের মোস্তফা জাব্বার ও হিসাব লিমিটেডকে এবং ‘ডিজাইন’ এ বিডি ফুড লি:, জিহান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজকে এবং ‘ট্রেডমার্কস’ এ মোহনা টেলিভিশন লি:, এসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লি:, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লি:, গোল্ডেন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল বিডি, প্রাণ আরএফএল গ্রুপ লি: এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড-কে সনদ প্রদান করেন।
এছাড়া, ভৌগোরিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে ঢাকাই মসলিন বাংলাদেশ তাঁ বোর্ডের চেয়ারম্যান মো: শাহ আলম, রংপুরের শতরঞ্জি বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশশের (বিসিক) চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান (এনডিসি), রাজশাহী সিল্ক বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মু. আবদুল হাকিম, বিজয়পুরের সাদা মাটি নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান, দিনাজপুরের কাটারীভোগ ও বাংলাদেশ কালিজিরা বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউশনের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর-কে সনদ প্রদান করেন।