আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য- ‘করোনা বিশ্বে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করি, সমতা অর্জনে নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করি’। এ প্রতিপাদ্য ধারণ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে সৃজনশীল ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে পুরুষের পাশাপাশি নারীর ভূমিকা অগ্রগণ্য। সংবিধানের ১৯(৩) অনুচ্ছেদে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
তাদের যথার্থ মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার, অধিকার প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতায়নসহ নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের পুনর্বাসন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ‘নারী পুনর্বাসন বোর্ড’ গঠন করেন। তিনি জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকারের বিষয়টি সংবিধানে নিশ্চিত করেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশ আজ নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। লিঙ্গ-সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে দেশ এখন রোল মডেল।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ বিশেষ ক্রোড়পত্র ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। এ দিবসের অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করবে। পাশাপাশি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং নারীর অধিকার ও সমতা প্রতিষ্ঠায় বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হবে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ ছাড়া দেশের সব জেলা-উপজেলায় নারীর উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন, অধিকার এবং এ বিষয়ে প্রচার ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে র্যালি, সমাবেশ ও আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
নারী দিবসের যত আয়োজন :মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় পাঁচ নারীকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়টি দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। নারী দিবস উদযাপনে মহিলা আওয়ামী লীগ সকালে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে থেকে র্যালি বের করবে। এটি উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
দিবসটি উপলক্ষে ‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করেছে জাতীয় প্রেস ক্লাব। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটে’র (উই ক্যান) পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের যুগপূর্তি অনুষ্ঠান করা হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চ নারী দিবস উদযাপন শুরু করে। এর আগে ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবার দিবসটি উদযাপন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সোশ্যালিস্ট পার্টি পোশাক তৈরির শ্রমিকদের সম্মান জানাতে ১৯০৮ সালে ধর্মঘট ডেকেছিল। তাদের প্রতি সম্মান জানাতে দিনটি বেছে নেওয়া হয়। নারীর কাজের অধিকার, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, কাজের বৈষম্যের অবসানের লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়।