১০ ডিসেম্বর রায়পুরা হানাদার মুক্ত দিবস।
১০ ডিসেম্বর রায়পুরা থানা পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে নরসিংদী অঞ্জলের মধ্যে রায়পুরা থানা সর্ব পাক হানাদার মুক্ত হয়। বৃহওর রায়পুরা আকাশে উড়ে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১ এর পর সারা দেশের ন্যায় রায়পুরা মুক্তিযুন্ধ আরো তীব্র হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বীরমুক্তযোন্ধা জনাব মো,রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু. নরসিংদী ০৫ আসনের সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্রী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন বীরমুক্তিযোন্ধাচ জনাব মো, আবদুস সাদেক চেয়ারম্যান রায়পুরা উপজেলা ও মো.শফিকুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
বীরমুক্তিযোন্ধা জনাব মো, নজরুল ইসলাম। বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়। স্বাধীন জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূ-খণ্ড। আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা। ভাষার ভিত্তিতে যে জাতীয়তাবাদ গড়ে উঠেছিল, এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বিজয়ের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় এ দিনে।
বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্নপূরণ হবার পাশাপাশি বহু তরতাজা প্রাণ বিসর্জন আর মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই অর্জন হওয়ায় বেদনাবিধূর এক শোকগাঁথার মাসও এই ডিসেম্বর।
এ মাসেই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর আল শামসদের সহযোগিতায় দেশের মেধা, শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করে দেয়ার এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের দ্বিতীয় কোন নজির বিশ্বে নেই।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণ আর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর জল, স্থল আর আকাশপথে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর চারদিক থেকে ভেসে আসতে থাকে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। যেখান থেকে ৭ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, বলে স্বাধীনতার ডাক দেন, সেখানেই পরাজয়ের দলিলে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজী। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। আর জাতি অর্জন করে হাজার বছরের স্বপ্নের স্বাধীনতা।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনী নিরস্ত্র জনগণের উপর অতর্কিতে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর এক অসম যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হবার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তার ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ২৫ মার্চ রাতেই রাজারবাগ পুলিশ লাইনে সশস্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র জনযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর জাতির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।
বিজয়ের মাসের প্রথম প্রহরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। পরে মোমবাতি প্রজ্বলন করেন নেতাকর্মীরা। এরপর বিজয় মিছিল নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যান নেতা-কর্মীরা। সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিজয়ের ক্ষণ স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়।
এসময় নেতাকর্মীরা জাতির পিতার দেখানো পথে দেশ এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।