জেলার খবর

পাইকগাছার মাহমুদ কাটিতে বিরোধপূর্ণ জমির দোকানঘর ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ; পরস্পর বিরোধী বক্তব্য প্রতিপক্ষদের।

এ কে আজাদ, পাইকগাছা উপজেলা প্রতিনিধি-(খুলনা)

পাইকগাছার মাহমুদ কাটিতে বিরোধপূর্ণ জমির দোকানঘর ভাংচুর,অগ্নি সংযোগ; পরস্পর বিরোধী বক্তব্য প্রতিপক্ষদের।

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার মামুদকাটিস্থ প্রধান সড়কের পাশে বিরোধপূর্ণ জমির দোকানঘর ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার ১ নং হরিঢালী ইউনিয়নের মামুদকাটি বাজারে এ ঘটনাটি ঘটে।

জমিটি বিরোধপূর্ণ হওয়ায় পক্ষ ও প্রতিপক্ষের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। তবে দোকানে অবস্থিত চা বিক্রেতা তারক দাস এ দিন দোকানে ছিলেন না বলে তারক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। ঠিক কি কারনে এ সময় দোকানে ছিলেন না, নাকি প্রতিপক্ষ কে ফাঁসাতে পরিকল্পিত কোন ষড়যন্ত্র থাকতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তারক জানান, তিনি ডাব কাটতে এ দিন বাইরে অবস্থান করেন। ফিরে এসে দেখেন দোকান ভাঙচুরের ঘটনা। কাওকে দোকান ভাঙচুর করতে দেখেছেন কিনা এমন প্রশ্নে পার্শ্ববর্তী দোকান মালিকরা কোন উত্তর দিতে পারেননি। তবে একাধিক ব্যাক্তি শুনেছেন বলে জানান।

এদিকে ঘটনার পর পরষ্পর পরষ্পরকে দায়ী করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে জমিক্রেতা ও খুলনা জেলা পরিষদ সদস্য নাহার আক্তার জানান, উক্ত জমি ক্রয়ের পর থেকে আমার দখল বুঝিয়ে দেন জমির মালিক নজরুল জোয়ার্দার। সেভাবেই ভোগদখলে থাকাবস্থায় প্রতিপক্ষ সাত্তার গোলদার আমাকে ফাঁসানোর জন্য স্ব-দলবলে এমন জঘন্য ঘটনাটি ঘটায়। জেলা পরিষদ সদস্য দাবি করেন, জমি ক্রয়কে কেন্দ্র করে ইতোপূর্বে প্রতিপক্ষ সাত্তার গোলদার আমাকে সম্মানহানির অপচেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে নতুন পরিকল্পনানুযায়ী ঘর ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটায়।

শুধু তাই নয় আমাকে বারংবার হুমকি দিয়ে আসছিল সে। এমতাবস্থায় আমি পাইকগাছা থানায় সাত্তার গোলদার সহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে জিডিও করি।

জেলা পরিষদ সদস্য নাহার আক্তার আরো বলেন, আমি সম্প্রতি একটি পা হারিয়েছি। প্রতিবন্ধী হয়ে কোন রকম কোন রকম মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি বৈধভাবে সম্পত্তি ক্রয় করার পর এবং মালিক নজরুল জোয়ার্দার আমাকে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার পর থেকে প্রতিপক্ষ সাত্তার গোলদারের গাত্রদাহ শুরু হয়। আমাকে আমার দখল থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করে আসছে সে।

অন্যদিকে প্রতিপক্ষ সাত্তার গোলদার জানান, তারা দোকানঘর ভাংচুর করেননি। বরং নাহার সহ কয়েক ব্যাক্তি গিয়ে ঘরটি ভাঙচুর করে অগ্নি সংযোগ ঘটায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজিব গোলদার জানান, আমি শান্তিপূর্ণ মিমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু হঠাৎ করে এমন ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি।

উল্লেখ্য যে, ঐ জমির মুল মালিক সবুর গোলদার বিগত ০৯/১২/০৪ তারিখে পুত্র আলতাফ হোসেন গোলদার, আতাউর রহমান গোলদার টুটুল ও ভাগনে নজরুল ইসলাম করেন। এরপর ভাগনে নজরুল ইসলাম উক্ত জমির মিউটেশন করে রেকর্ড প্রস্তুত করেন। যাহার নামজারী কেস নং(। ×-।)/২০১৮-১৯। যাহা গত ২৯/১১/১৮ তারিখ আদেশে উজির আলী গোলদারের নাম ও অংশ হতে কর্তন পুর্বক নজরুল ইসলাম জোয়াদ্দারের নামে আরএস ৯৬ খতিয়ানের ৪৭৫ দাগের মধ্যে ০.০১৬৬ শতক জমির রেকর্ড প্রস্তুত হয়।

উক্ত জমি পরবর্তীতে জেলা পরিষদ সদস্য নাহার আক্তারের নিকট হস্তান্তর করে দখল বুঝিয়ে দেন নজরুল জোয়ার্দার। এরপর থেকে বিবাদটি লেগেই ছিল।

জানাগেছে, ইতোপূর্বে উভয় পক্ষের মাঝে ১৪৪ ধারার মামলা হয়। আদালতের আদেশ অমান্য করে আইল সীমানা নির্ধারণের পিলার ও সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলে প্রতিপক্ষ সাত্তার গোলদার। আর এমন অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা পরিষদ সদস্য নাহার আক্তার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button