জেলার খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়ায় ভাটামাথা পুকুরে বিষ প্রয়োগে ৩৫ লক্ষাধিক টাকার মাছ নিধনের অভিযোগ।

মোঃ আল আমিন, জেলা প্রতিনিধি-(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়ায় ভাটামাথা পুকুরে বিষ প্রয়োগে ৩৫ লক্ষাধিক টাকার মাছ নিধনের অভিযোগ।

মৃত মাছে সাদা হয়ে গেছে পুরো পুকুর।মাছের কারনে পানি দেখা যাচ্ছিল না। তিলতিল করে পরিবারের সকল সদস্যদের পরিশ্রমের মাধ্যমে গত ৬ বছর ধরে ১০ একর পরিমাণের পুকুরটিতে মাছ চাষ করছিলেন আব্দুস সামাদ(৭৫) নামের এক বৃদ্ধ।হতভাগা আব্দুস সামাদের পরিবারের স্বপ্ন যেন তাসের ঘরের মতই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল দুষ্কৃতিকারীদের দেয়া বিষের তাণ্ডবে।এমনই এক মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ভাটামাথা গ্রামে।

এরকম নিকৃষ্ট ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।পুকুরে ভেসে উঠা মাছের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।
জানা যায়,ভাটামাথা গ্রামের পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা হাজী আব্দুস সামাদ (৭৫) তার বাড়ির পাশের ১০ একর পরিমাণ পুকুরে ৬ বৎসর যাবৎ মাছ চাষ করে আসছিলেন।বিগত দিনে মাছের ব্যবসায় কখনো লোকসান হয়নি তার।আব্দুস সামাদের স্ত্রী-পুত্র পরিজনদের নিয়ে বেশ ভালই যাচ্ছিল তার সংসার। কিন্তু গত শুক্রবার দিবাগত রাতের আধারে মাছের সাথে শত্রুতা করে কে বা কাহারা পুকুরে বিষ প্রয়োগ করেছে তা ভেবে পাচ্ছেনা কেউ।বিশাল আকারের এই পুকুরটিতে ৭ প্রজাতির আনুমানিক ৯৬ হাজার তিনশত পিস মাছ ছিল। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩৫ লক্ষাধিক টাকা।

পুকুরের মালিক আব্দুস সামাদ জানান,‘আমার পাঁচ ছেলে এই পুকুরে শ্রম দিয়েছে। মাছ চাষ করেছে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে। কিছু লাভের আশায় কঠোর পরিশ্রম করেছে। কিন্তু কে বা কাহারা পুকুরে বিষ দিয়ে আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে জানিনা।আমার বড় ছেলে আব্দুল কাদির (৪০) ঋণের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।অন্য ছেলেদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। মাছের‌‌ খাবারের দোকানে প্রচুর টাকা ঋণ রয়েছে। কিভাবে ঋণ পরিশোধ করব এখন বুঝে আসছেনা।এমতাবস্থায় সরকারের সহায়তা দাবি করছি।’

তার মেজো ছেলে বলেন, ‘এমনিতে কারো সাথে কোন শত্রুতা নেই আমাদের। তবে গত কয়েকদিন পূর্বে মাছ বিক্রির জন্য প্রকাশ্যে নিলামের মাধ্যমে মাছ বিক্রির প্রস্তাবনা তোলা হয়।সেখানে নিলামে অংশগ্রহণকারী তিনজন হলেন কসবা উপজেলার এরশাদ, ধরখার ইউনিয়নের ভাটামাথা গ্রামের সজল মিয়ার ছেলে রিমন এবং জুলু মিয়ার ছেলে ইকরাম মিয়া। তাদের মধ্য থেকে নিলামে মাছ পেয়েছিলেন কসবা উপজেলার এরশাদ মিয়া। তাকে পুকুর থেকে মাছ তুলে দেওয়ার কথা ছিল যেদিন তার পূর্বের রাতেই কে বা কাহারা বিষ প্রয়োগ করেছে তা বুঝে উঠতে পারছি না। তবে এ বিষয়ে থানায় কোন সাধারণ ডাইরী অথবা অভিযোগ করতে সুযোগ পায়নি‌‌।বড় ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কারনেই মামলা করার সময় পাইনি। তবে এখন থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

এ বিষয়ে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ রসুল আহমেদ নিজামী জানান, ‘এ বিষয়ে কেউ এখনো জানায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button