জেলার খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়ায় যৌতুকের টাকার জন্য গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ।

মোঃ আল আমিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়ায় যৌতুকের টাকার জন্য গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় যৌতুকের টাকার জন্য রিফাত সুলতানা নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।এ বিষয়ে গত ৩১ শে আগস্ট নির্যাতিতার পিতা জসীম মৃধা বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মামলা দায়ের করেন।জানা যায়,নির্যাতিত গৃহবধূ মোগড়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের জসীম মৃধার কন্যা রিফাত সুলতানা।আজ থেকে ৬ বছর আগে রিফাত সুলতানা তার পাশের বাড়ির মৃত হোসেন মিয়ার ছেলে সুমন মিয়ার(২৮)সাথে প্রেম করে বিয়ে করেন।পরবর্তীতে সামাজিকভাবে উভয়পক্ষের লোকজন সেটা মেনে নিয়েছিল। খুব সুন্দরভাবেই তাদের সংসার চলছিল। এর মধ্যে ২ সন্তানের মা হন রিফাত সুলতানা।যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের বিষয়ে রিফাত সুলতানা বলেন,গত বছর দুয়েক যাবৎ আমার স্বামী ইয়াছিন আরাফাত সুমন মিয়া মাদকের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে।ইয়াবা সহ বিভিন্ন মাদক সেবন করে সে আমাকে শারীরিক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করে।প্রায়ই মধ্যরাতে মাদকসেবন করে বাসায় এসে আমাকে প্রচন্ড মারধর করে। আমার বাবার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে সে।

বিভিন্ন এনজিও ব্যাংক থেকে মোট ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন করে সুমনকে দিয়েছি।সে এই টাকার একাংশ দোকানে ব্যবসার কাজে খরচ করেছে।বাঁকি টাকা নেশা করে শেষ করেছে।এখন আমার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে কিস্তি চালাতে বলে।গত ২৯ শে আগস্ট রাতে আমার বাসায় পারিবারিক মিটিং এর এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজনের সামনে আমার হাতে কামড় দেয় এবং টর্চলাইট দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করে রক্তাক্ত করে।

মাদক সেবন ও যৌতুক দাবি করে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে রিফাত সুলতানার স্বামী সুমন মিয়া বলেন,২ মাস আগে আমার স্ত্রীকে বিশ্বাস করিরা তার নিকট আমার ব্যবসার ৪ লাখ টাকা ঘরে রাখার জন্য জমা দেই।কিছুূিন পর ব্যবসার জন্য উক্ত টাকা ফেরত চাইলে আমার স্ত্রী আমাকে মাত্র এক লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেয়।।অবশিষ্ট টাকা আমার শ্বশুরকে দিয়েছে এবং কয়েক দিনের মধ্যে ফেরত দিবে বলে জানায়।এ বিষয়ে শ্বশুর বাড়িতে পারিবারিক শালিশের এক পর্যায়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমি ও আমার মাকে প্রচন্ড মারধর করে।আমার মায়ের চারটি দাঁত ফেলে দেয়।আমার গলায় টিপ দিয়ে ধরার পর ছুটতে না পেরে স্ত্রীর হাতে কামড় দিছি।

শ্বশুরকে টাকা দেয়ার সময় কোনো স্বাক্ষী প্রমাণ রেখেছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সুমন মিয়া বলেন,এটা হলো স্বামী স্ত্রীর বিশ্বাসের ব্যাপার।মানুষে কোটি কোটি টাকার লেনদেন করে কেউ জানেনা। এখন তারা এই অল্প টাকার জন্য পল্টি মারতেছে।এখন টাকা নেয়ার বিষয় সবাই অস্বীকার করতেছে।

এ বিষয়ে জসিম মৃধা বলেন, আমার মেয়ে এবং মেয়ের জামাই তার ব্যবসায়ীক কাজে লাগানোর জন্য বিভিন্ন এনিজিও ব্যাংক থেকে কয়েক লক্ষ টাকা উত্তোলন করে এবং মেয়ের জামাইয়ের মায়ের গহনা বিক্রি করে ।কিন্ত তারা এখন আমার পরিবারের উপর সেই টাকার ভার দিচ্ছে। আমি আমার মেয়ের জামাইয়ের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি। উল্টো মেয়ের সংসারে শান্তির কথা ভেবে অনেকবার তার কিস্তির টাকা দিয়েছি।

এ বিষয়ে মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রোকেয়া বলেন,সুমন সম্পর্কে আমার বোনের ছেলে।আমার কাছে সুমন জানালো তার শ্বশুর জসীম মৃধাকে সে টাকা দিয়েছে।একমাত্র বউকে বিশ্বাস করে কাউকে না জানিয়ে স্বাক্ষী প্রমাণ না রেখে এতগুলো টাকা কেন শ্বশুরকে দিল এইজন্য সুমনকে এ ব্যাপারে প্রশ্রয় দেয়নি।

মামলার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত আখাউড়া থানার সাব ইন্সপেক্টর নিতাই চন্দ্র দাসের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এখন কথা বলা যাবে না।তদন্তের পর সরাসরি বিস্তারিত জানানো হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button