হতাশা ও আর ক্ষোভ জানিয়ে অবিলম্বে নোটিশ প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় জমির মালিকরা।
সাহাদাৎ হোসেন শাহীন, জেলা প্রতিনিধি-(নারায়ণগঞ্জ)
হতাশা ও আর ক্ষোভ জানিয়ে অবিলম্বে নোটিশ প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় জমির মালিকরা।
রূপগঞ্জে মেট্টোরেল ডিপোর জমি অধিগ্রহণ নোটিশ
প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন জমি মালিকদের সঙ্গে মুল্য নির্ধারন ও সম্মতি ছাড়াই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মেট্টোরেল প্রকল্পের ম্যাস র্যাপিট ট্রানজিট এমআরটি লাইন ১ এর পূর্বাচল ডিপো বাস্তবায়নের জন্য অধিগ্রহণ নোটিশ ছেড়েছেন জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা। এতে হতাশা ও আর ক্ষোভ জানিয়ে অবিলম্বে নোটিশ প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় জমি মালিকরা।
৩০ আগষ্ট্ রবিবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পিতলগঞ্জ চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বক্তব্যে জানান, পূর্বাচলের পাশের অতিমুল্যের এ বাপদাদার ভিটে মাটি নামেমাত্র মূল্যে ছাড়তে নারাজ। তাই “প্রয়োজনে জান দেবো তবুৃ জমি দেবোনা”অঙ্গিকারে আন্দোলনে থাকবো।
বক্তারা আরো জানান, জেলা অধিগ্রহণ শাখা থেকে প্রাপ্ত নোটিশ সূত্রে জানা যায়, মেট্টোরেল প্রকল্পের এমআরটি লাইন ১ ম্যাস ট্রানজিট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কাগজে কলমে স্থান নির্ধারন করে নকশাও চুড়ান্ত করেছেন মেট্টোরেল বিভাগ।
এটি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় পূর্বাচল ৪নং সেক্টর লগোয়া রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণখালী ও পিতলগঞ্জ মৌজার প্রায় ৯৬ একর ৩ ফসলি, বসতভিটা, সামাজিক,ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি পছন্দ করেছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে শুরুতে দফায় দফায় জমি মালিকদের সঙ্গে অধিগ্রহণ মূল্য ও সীমানা সংক্রান্ত বিষয়ে সভা সমাবেশ করা হলেও সেসব সভায় মূল্য নিয়ে কোন প্রকার সমঝোতা হয়নি জমি মালিকদের।
পিতলগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আমিনুল হক ঝিনু ভূঁইয়া তার বক্তব্যে বলেন, পূর্বাচল নতুন শহর বাস্তবায়নের জন্য ব্রাহ্মনখালী মৌজায় জমি অধিগ্রহণ করার পর বহু মানুষ পিতলগঞ্জে ঘর বাড়ি করে বসবাস করছেন।
তাছাড়া পূর্বাচলের পাশের এ জমিতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) পদ্মা অয়েল একটি ডিপো গড়তে জমি অধিগ্রহণ করেছেন। এতে পিতলগঞ্জ মৌজার বসতভিটা ও ফসলি জমি কমে এসেছে।
সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হারেজ তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের এলাকার জমি মালিকদের সঙ্গে জমির মুল্য নির্ধারন না করেই অধিগ্রহণ নোটিশ দিয়েছেন তারা। এতে আমাদের স্থাবর সম্পত্তি নামেমাত্র মুল্যে ছেড়ে দিতে বাধ্য করার অপচেষ্টা করছে। এতে আমাদের অধিকার ক্ষূন্ন হবে। আমরা ঘর বাড়ি হারিয়ে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
ওবাইদুল মজিদ জুয়েল মাস্টার তার বক্তব্যে বলেন, অধিগ্রহণ নোটিশের আঁওতায় একটি এমপিও ভুক্ত দাখিল মাদরাসা, কওমি মাদরাসা ছাড়াও মসজিদ, মন্দিরসহ শত শত বসতঘর বিদ্যমান। তাছাড়া পূর্বাচলের পাশের এ জমির ভবিষ্যত মূল্য ক্রমেই বাড়বে।
একই এলাকার অপর বাসিন্দা শামসুল হক বলেন, আমাদের স্বপ্ন ও আশা জড়িত এই বাপদাদার রেখে যাওয়া জমিকে ঘিরে । এমতাবস্থায় জমি মালিকদের সঙ্গে কোন প্রকার সমজোতা ছাড়া এমন অধিগ্রহণ নোটিশ প্রাপ্তি আমাদের দুশ্চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।
অপর বাসিন্দা আব্দুল আউয়াল ভুইয়া তার বক্তব্যে বলেন, ৭ শতাধিতক অধিক হিšদু সংখ্যা লঘু পরিবারের বসবাস এখানে। হাজারের অধিক মুসলিম পরিবারের ঘরবাড়ি রয়েছে। এসব ছেড়ে দিয়ে আমরা মেট্টোরেল চাইনা। তাই অবিলম্বে এ নোটিশ প্রত্যাহারের দাবী জানাচ্ছি। প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনে যাবো আমরা।
এ সময় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু হোসেন ভুঁইয়া রানুর সভাপতিত্বে স্থানীয় জমি মালিকদের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হারেজ, পিতলগঞ্জ দাখিল মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওবাইদুল মজিদ জুয়েল মাস্টার, মাদরাসা সুপার মাওলানা সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া, ঠিকাদার আমিনুল হক ভুঁইয়া ঝিনু, জায়েদুল রহমান, ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল ভুঁইয়া, সাবেক জেলা ছাত্রলীগ সহ সভাপতি মনিরুজ্জামান ভুঁইয়া, শামসুল হক প্রমূখ।