বন্দরে কিশোর গ্যাংদের ধাওয়ায় দুই ছাত্র নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার ৬-জন কে আদালতে প্রেরণ।
সাহাদাৎ হোসেন শাহীন, জেলা প্রতিনিধি-(নারায়ণগঞ্জ)
বন্দরে কিশোর গ্যাংদের ধাওয়ায় দুই ছাত্র নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার ৬-জন কে আদালতে প্রেরণ।
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে কিশোর গ্যাংদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় প্রান রক্ষার্থে শীতলক্ষা নদীতে ঝাঁপিয়ে পরে নিহত দুই শিক্ষার্থী। লাশ উদ্ধারের পর থানায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। নিহত স্কুল ছাত্র জিসানের পিতা বন্দর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক কাজিম আহাম্মেদ বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামী করে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং- ১৫(৮)২০ ধারা- ১৪৩/ ৩০২/২০১/৩৪ দঃবিঃ। এ ঘটনায় পুলিশ ইতোমধ্যে এজাহারভুক্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে বন্দর থানা পুলিশ। তাদের নামনীয় তারা হলো আলভি (২০), মোক্তার হোসেন (৫৭), আহম্মদ আলী (৪৫), কাশেম (২৮), আনোয়ার হোসেন (৪৫), শিপলু (২৩)।
পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে প্রেরন করেন।
নিহতরা হলো মৃত মিনহাজুল ইসলাম মিহাদ (১৮) বন্দরের কদমরসুল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগের ছাত্র। সে নাজিমউদ্দিন খানের ছেলে ও বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি কমল খানের ভাতিজা। অপরজন হলো বন্দরের বিএম ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র জিসান (১৫)। সে বন্দর প্রেসক্লাবের সাবেক সেক্রেটারী কাজিমউদ্দিনের ছেলে।
বন্দর থানার ওসি ফখরুদ্দিন ভূইয়া মামলার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মামলার তদন্তকারি কর্মকতার্ বন্দর ফাঁড়ী ইন্সপেক্টর মাসুদ রানা হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ১৩ জন আসামীর মধ্যে ৬ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে। এবং বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যহত রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রেঃ জানা গেছে, শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব তীরে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ইস্পাহানী ঘাট এলাকায় সোমবার ১০ আগষ্ট বিকেলে একরামপুর ইস্পাহানী এলাকার সামাদ সরদারের ছেলে বড় শামীম গ্রুপের সাথে একই এলাকার রবিউল মিয়ার ছেলে অন্তর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
এসময় একপক্ষের ধাওয়ায় আত্মরক্ষার্থে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দেয় মিহাদ ও জিসান। এদিকে মিহাদ ও জিসান নদী থেকে উঠে গেছে এমনটি ভেবে স্থানীয় লোকজন তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি। তবে রাতে তারা বাড়িতে ফিরে না যাওয়ায় স্বজনেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করলে জানতে পারে সংঘর্ষ ও ধাওয়ার ঘটনায় তারা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল।
এসময় তাদের খোঁজে শীতলক্ষ্যার তীরে বাড়তে শুরু করে জনসমাগম। রাত সাড়ে ১০টায় স্থানীয় জেলেদের সহযোগিতায় বন্দর থানা পুলিশ শীতলক্ষা নদী থেকে ওই দুই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী ও বন্দর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক কাজিম আহাম্মেদ গনমাধ্যমকর্মীদের জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আমার স্কুল পড়ুয়া ছেলে জিসানকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে পরিকল্পিত ভাবে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ গুম করার জন্য শীতলক্ষা নদীতে ফেলে দেয় বন্দর ৩৫নং উইসন রোড এলাকার আলফাজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে মোক্তার হোসেন একই এলাকার মৃত সাবেদ আলী মিয়ার ছেলে আহাম্মদ আলী ও তার ছেলে কাশেম একই এলাকার মহর আলী মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন একই এলাকার নলু মিয়ার ছেলে শিপলু ও ঢাকা ডিএমপি বাড্ডা এলাকার গোলাম মাবুদ মিয়ার ছেলে আলভীসহ আরো অজ্ঞাত ৭/৮ জন সন্ত্রাসী। আমি আমার একমাত্র সন্তান হারিয়ে নিঃশ্ব হয়ে পরেছি।
আমি আমার ছেলের হত্যাকারিদের দ্রুত বিচার দাবি জানাচ্ছে। নিহত দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে জিসানের নামাজের জানাযা ১১ আগষ্ট মঙ্গলবার বাদ আসর নবীগঞ্জ বাগবাড়ী এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়।
পরে ওই দিন বাদ মাগরিব নিহত কলেজ ছাত্র মিহাদ ও তার বন্ধু স্কুল ছাত্র জিসানের জানাযা বন্দর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হওযার পর বন্দর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে এক সাথে দুই বন্ধুর লাশ দাফন সম্পর্ন করে নিহতের আত্মীয় স্বজনরা।