বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ঢাকা জেলার আশপাশের নদীগুলোর পানি বাড়ছে। ধরলা, তিস্তা ও ঢাকার আশপাশের নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। গতকাল বালু নদীর ডেমরা পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার, তুরাগের মিরপুরে ৮ সেন্টিমিটার, টঙ্গী খালের টঙ্গী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরীর জাগির পয়েন্টে ৯৮ ও শীতলক্ষ্যার নারায়ণগঞ্জ পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। একইসঙ্গে বাড়ছে ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি।
অন্য জেলাগুলোর মধ্যে আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর ও নওগাঁ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। অন্যদিকে নাটোর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের নদনদীর ৪৩টি পয়েন্টে পানি বেড়েছে, কমেছে ৫৫টি পয়েন্টে। এখনো বিপদসীমার উপরে ২৯টি স্টেশনের পানি।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ধরলার পানি কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার. ব্রহ্মপুত্র নুনখাওয়া পয়েন্টে ২০, চিলমারী পয়েন্টে ৪৭ ও ঘাঘট গাইবান্ধা পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে যমুনা নদীর ফুলছড়ি পয়েন্টে ৭৯, বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ৮৯, সারিয়াকান্দি পয়েন্টে ১০০, কাজিপুর পয়েন্টে ৮৪, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৭৩, আরিচা পয়েন্টে ৮৬, আত্রাই নদীর বাঘাবাড়ি পয়েন্টে ১১২, আত্রাই পয়েন্টে ১৮, গুড় নদীর সিংড়া পয়েন্টে ৯১, ধলেশ্বরী নদীর জাগির পয়েন্টে ৯৮, এলাসিন পয়েন্টে ১১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এখন প্রবাহিত হচ্ছে। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের জামালপুর পয়েন্টে ১৮, পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ১১৯, ভাগ্যক‚ল পয়েন্টে ৭৪, মাওয়া পয়েন্টে ৬৮, সুরেশ্বর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার, পুরাতন সুরমা নদীর দিরাই পয়েন্টে ৫, তিতাস নদীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পয়েন্টে ৩০, মেঘনা নদীর চাঁদপুর পয়েন্টে ২৩, আড়িয়াল খাঁ নদীর মাদারীপুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দীর্ঘ বন্যায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট নিয়ে চরম কষ্টে দিন দিন পার করছে বিভিন্ন জেলার ৪৭ লক্ষাধিক বানভাসি মানুষ। ত্রাণ স্বল্পতায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারগুলো। খাদ্যের অভাবে দুর্ভোগ বেড়েছে গৃহপালিত পশু-পাখির। ভাঙছে সড়ক-মহাসড়ক, বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ হাট-বাজার। ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধে আবারো ধস নেমেছে। ভেঙে গেছে ৪৫ মিটার নতুন আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে মানুষ। অভিযোগ রয়েছে পর্যাপ্ত ত্রাণ না পাওয়ারও। তবে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা হিসেবে পর্যাপ্ত চাল, নগদ টাকা ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দ দিয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।