রূপগঞ্জে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল। তিন বলয়ে বিভক্ত উপজেলা বিএনপিতে রয়েছে আলাদা প্রার্থী। ছাত্রদলের প্রবীন নেতারাও কমিটি গঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কমিটির শীর্ষ পদ পেতে লবিং গ্র“পিং ও দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন দলের নেতারা।
জানা যায়, ১৯৯৫ সালে রুপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলে আনোয়ার সাদাত সায়েমকে সভাপতি ও আশরাফুল হক রিপনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ২০০২ সালে একটি পদ ব্যতীত পুনরায় ওই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এদিকে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির তিনটি বলয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রিয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান।
ইতিমধ্যে কাজী মনির রাজনীতি থেকে সরে পরেছেন। দুই যুগে ছাত্রদলের নেতারা বয়সের কারণে কমিটি হওয়ার আগেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের তোখোড় নেতা নাহিদ হাসান ভুঁইয়ার আহ্বায়ক ঠেকাতে তৈমূর ও কাজী মনির বলয়ের নেতারা মাঠে নেমেছেন। এ মিশনে যুক্ত হয়েছেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন, আনোয়ার সাদাত সায়েম, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক ভুঁইয়া, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, জেলা ছাত্রদলের বর্তমান নেতারাও। তবে কয়েকজন নেতা এসএসসি সার্টিফিকেট নেই এমন ব্যক্তিকে আহ্বায়ক করার চেষ্টা করছেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদ পেতে লবিং করছেন নাহিদ হাসান ভুঁইয়া ছাড়াও সুলতান মাহামুদ (বিবাহিত), মাসুম বিল্লাহ (নবম শ্রেণি), সদস্য সচিব পদে মেহেদী হাসান মিঠু, জাইদুল ইসলাম, মাসুদুর রহমান প্রমুখ।
সাবেক ছাত্রদল নেতা আবু মো. মাসুম ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রদল নেতাদের ঘিরে নানা অপপ্রচার শুর’ করেছে। সে ছাত্র রাজনীতির শুর’ থেকেই ফেনসিডিল সেবন করতো বলে অভিযোগ ছিল। আবু মো. মাসুম নেশাগ্রস্ত হয়েই ছাত্রদলকে ঘিরে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে ছাত্রদলের তৃণমূল নেতারা মনে করেন। ছাত্রদল নেতা সজিব জানান, ফেনসিডিলসহ একাধিকবার আবু মো. মাসুমকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এসব কারণে বিগত দিনে সে ছাত্রদলের পদ পাননি।
অভিযুক্ত আবু মো. মাসুম জানান, এখন মাদকের সাথে যুক্ত নই। তাছাড়া টাকার বিনিময়ে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পায়তারা চলছে।
ছাত্রদলের রাজনীতি করতে গিয়ে নাহিদ হাসান ভুঁইয়া একাধিকবার হামলা, মামলার শিকার হয়েছেন। এক ডজন মামলার আসামি হয়ে টানা ৯মাস হাজতবাস করেছেন জাইদুল ইসলাম। সাংসারিক হতে বিয়ে করেছেন সুলতান মাহমুদ। বিয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিয়ে রেজিষ্টার্ড আবু তাহের মো. ফারুক হোসেনের নাম ব্যবহার করে অবিবাহিত বলে ভুয়া সনদ তৈরি করেছেন সুলতান মাহমুদ। যা এখন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু হয়েছে। এসএসসির সনদ না থাকায় বেকায়দায় পরেছেন মাসুম বিল্লাহ। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনির ভাতিজা মেহেদী হাসান মিঠু ও মাসুদুর রহমান লবিং করছেন।
নাহিদ হাসান ভুঁইয়া বলেন, দলের জন্য কাজ করেছি। অবশ্যই দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। ছাত্রদলের প্রবীন নেতারা আর্থিক সুবিধা নিয়ে দুর্বল কমিটি গঠনের মিশন কখনো সফল হবে না। জাইদুল ইসলাম বলেন, ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে হামলা-মামলাসহ ক্ষমতাসীন দলের লালসার শিকার হয়ে টানা ৯মাস হাজতবাস করতে হয়েছে। প্রয়োজনে দলের জন্য আরো ত্যাগ শিকার করবো।
জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার সাদাত ছায়েম বলেন, আর্থিক সুবিধা নিয়ে কারো পক্ষ নেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। তবে নিজেদের বলয় শক্তিশালী করতে কাজ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছ্রাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি জানান, যোগ্য প্রার্থীদের অবশ্যই মূল্যায়ন করা হবে। রূপগঞ্জ উপজেলাসহ সকল ইউনিট কমিটি গঠনে কোনো অনিয়ম হবে না।