জাতীয়

রিজেন্ট শাহেদ গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্কঃ

বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। বিষয়টি চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
তিনি বলেন, বুধবার ভোরে র‌্যাবের একটি বিশেষ অভিযানে সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র জব্দ করা হয়।
আশিক বিল্লাহ জানান, সাহেদকে আজকেই ঢাকায় নিয়ে আসা হবে।
এরআগে রাজধানী ঢাকা ও মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের শমসেরনগরসহ কয়েকটি এলাকায় সাহেদকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাহেদের ফোন ট্র্যাক করে তার অবস্থান নির্ধারণের চেষ্টাও চালায়।
সাহেদের অবস্থান অনুমান করে দেশের বিভিন্ন জেলায় তল্লাশি চালায় র‌্যাব ও পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তার করতে কয়েকটি জেলার সব সীমান্ত, রিসোর্ট, হোটেল মোটেলেও নজরদারি বাড়ানো হয়।
সর্বশেষ মঙ্গলবার রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এদিন রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত সাতজনকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই দিনে সাহেদের বিরুদ্ধে করা র‌্যাবের মামলা ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।
ছাড়াও সাহেদের প্রধান সহযোগী তারেক শিবলীকে রাজধানীর নাখালপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। হেফাজতে নেয়া হয় টিভি নাটকের অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘টেলিহোম’র প্রধান ও সাহেদের ভায়রা মোহাম্মদ আলী বশিরকে।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পুলিশ। জব্দ করা হয় সাহেদের পাসপোর্ট। হদিস মিলে তার বিরুদ্ধে আরও ২৩ মামলার। মোট ৫৬টি মামলার আসামি সাহেদ।
সাহেদ নিজেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য বলে পরিচয় দিলেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সাহেদ একসময় বিএনপি করতেন। বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে সাহেদের তোলা ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার নামে প্রতারণা এবং ‘করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা এবং বাড়িতে থাকা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে সম্প্রতি র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের প্রথমে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কে অবস্থিত রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়। সেখান থেকে ৮ জনকে আটকের পর র‍্যাবের দলটি মিরপুরে রিজেন্টের অন্য শাখায় অভিযান পরিচালনা করে। সেসময় র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, ‘করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা এবং বাড়িতে থাকা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করত রিজেন্ট হাসপাতাল।’
এছাড়াও সরকার থেকে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টেস্ট করার অনুমতি নিয়ে রিপোর্টপ্রতি সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকার করে আদায় করত তারা। এভাবে জনগণের সাথে প্রতারণা করে মোট তিন কোটি টাকার হাতিয়েছে রিজেন্ট। এই সমস্ত অপরাধ ও টাকার নিয়ন্ত্রণ চেয়ারম্যান সাহেব (রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ) নিজে করতেন অফিসে বসে।’’
সারোয়ার আলম আরও বলেন, ‘রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় থেকেই এই অপকর্মগুলো হতো বিধায় এটি সিলগালা করা হয়েছে। পাশাপাশি রোগীদের স্থানান্তর করে হাসপাতাল দুটিও সিলগালা করা হয়েছে।’
এ ঘটনায় গত ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলায় আটককৃত ৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সাহেদসহ ৯ জনকে পলাতক আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
নিউজঃ চ্যানেল আই অনলাইন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button