ইসরায়েলের অনুমোদন গাজায় যুদ্ধবিরতিতে
বন্দিবিনিময়ের চুক্তিতে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইল সরকার। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘চুক্তির মানে এই না যে যুদ্ধ এখনই শেষ হয়ে যাবে।’
বুধবার (২২ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাতারের মধ্যস্থতায় চারদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার। চুক্তি অনুযায়ী ৫০ জন জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে বন্দী ১৫০ ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন; যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হামদাহ সালহুত বলেন, ইসরাইল সরকার হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির চুক্তির অনুমোদনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তবে এই চুক্তির ফাইনাল কপি আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। এটি এখনো গণমাধ্যম বা জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হয়নি।
এর আগে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে প্রথমবারের মতো সমঝোতায় যেতে রাজি হয়েছে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস।
ইসরাইলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, হামাস যদি বন্দি ইসরাইলিদের মুক্তি দেয়, তাহলে ইসরাইলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদেরও ছেড়ে দেবে দেশটির সরকার। এখন কেবল হামাসের জবাবের অপেক্ষা।
অন্যদিকে, বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের চেয়ারম্যান ও রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেন, ‘আমরা একটি সমঝোতা চুক্তির কাছাকাছি রয়েছি। কাতারের মাধ্যমে আমরা এই চুক্তির প্রস্তাব পেয়েছি এবং তাতে সম্মতিও দিয়েছি।’ পরে রয়টার্সকে পাঠানো এক লিখিত বিবৃতিতেও একই কথা বলেছেন হামাসের চেয়ারম্যান।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে অতর্কিত বোমা হামলা চালায় হামাস। এতে ইসরাইলের ১২০০ মানুষ নিহত হয়। এছাড়াও দেশটির ২৪০ বাসিন্দাকে বন্দি করে নিয়ে যায় হামাস। অন্যদিকে হামাসের এ হামলার জবাবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে অনবরত বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইসরাইলি বোমা হামলায় গাজায় ১৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি শিশু। আর নারীর সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়াও চলমান এ সংঘাতে ৩৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।