২১০০ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা করে দিয়ে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকারের ‘শতবর্ষী পরিকল্পনার’ কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২১০০ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা করে দিয়ে যাচ্ছি। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সবাইকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘৪২ তম জাতীয় সমাবেশ-২০২২’ এর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গাজীপুরের সফীপুরস্থ আনসার ভিডিপি একাডেমির মূল অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। সেজন্য আপনাদের সবাইকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সবাই সেই প্রচেষ্টা নেবেন এবং সেটাই আমি আশা করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, প্রবৃদ্ধি অর্জন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অর্থনীতিও যথেষ্ট শক্তিশালী হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আমি মনে করি আপনাদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। কাজেই সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করবেন সেটাই আমি আশা করি।
তিনি এ প্রসঙ্গে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও এ অঞ্চলের মানুষকে জলবায়ুর অভিঘাত থেকে মুক্ত রাখা এবং উন্নত জীবন দেওয়ার লক্ষ্যে শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০ বাস্তবায়নেও তার সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, এই পরিকল্পনা আমি দিয়ে গেলাম যেন বাংলাদেশের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা আর কখনো কেউ ব্যাহত করতে না পারে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। ব্রডব্যান্ড প্রতি ইউনিয়নে পৌঁছে গেছে, মহাকাশে স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ আমরা উৎক্ষেপন করেছি, অনলাইনে সব কাজকর্ম হচ্ছে। করোনার মধ্যে আর্থিক প্রণোদনাও ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরাসরি প্রাপকের কাছে পৌঁছে দিয়েছি-সে ভাবেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সময়ে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না। তাদের জন্য জমি দিচ্ছি, ঘর করে দিচ্ছি। পাশাপাশি প্রতিটি ঘরে আলো জ্বালানোর যে ঘোষণা দিয়েছিলাম-সে অনুযায়ী ঘরে ঘরে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ বাহিনীর সদস্যরা মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল ১২ জন বীর আনসার সদস্য মুজিব নগরের আম্র কাননে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে এ বাহিনীকে করেছে গৌরবান্বিত।
তিনি ভাষা শহিদ আনসার কমান্ডার আব্দুল জব্বারসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ৬৭০ জন বীর আনসারসহ সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম।
শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে আনসার একাডেমীতে নবনির্মিত ‘মুজিব প্রাঙ্গন’, কেন্দ্রিয় মসজিদসহ আনসার সদস্যদের বিভিন্ন স্থাপনার ও উদ্বোধন করেন।