আন্তর্জাতিক

জলবায়ু বদলের জেরে বিপন্ন স্নো-লেপার্ড

পাহাড়ের ধারঘেঁষা বনাঞ্চল কেটে সাফ হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে হোটেল, সড়ক। পর্যটকরা এখন অনেক সহজে পাহাড়ে পৌঁছে যাচ্ছেন। আর এই পর্যটন ব্যবসা বাড়াতে গিয়ে পাহাড়ের জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে। উন্নয়নের ধাক্কায় পাহাড়ে ঘনঘন ধস নামছে। এতে বিপদের মুখে স্নো-লেপার্ড বা তুষারচিতার দল।

সদ্যই পালিত হয়েছে ‘স্নো-লেপার্ড ডে’। শীতপ্রধান অঞ্চলে মূলত স্নো-লেপার্ড দেখা যায়। ভারতের হিমালয় অঞ্চল তুষারচিতার বাসস্থান। জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, অরুণাচল, সিকিম, সামান্য হলেও পশ্চিমবঙ্গেও এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা উষ্ণ এলাকায় থাকতে পারে না। শীতপ্রধান এলাকাই প্রিয়। তাই পাহাড়ে বিপর্যয়ের জেরে এদেশের স্নো-লেপার্ডদের নিয়ে চিন্তিত পশুপ্রেমী পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে রাজ্যের চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষও।

দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানা পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কে স্নো-লেপার্ড রয়েছে। পাহাড়ে তোবগেদাঁড়াতে রয়েছে স্নো লেপার্ডের সংরক্ষণ কেন্দ্র। পুরুষ ও স্ত্রী মিলিয়ে এর সংখ্যা মোট ১২। সম্প্রতি পাহাড়ে যেভাবে ধস নামে তাতে স্নো-লেপার্ডদের নিয়ে চিন্তিত ‘শের’। এদিন শের (সোসাইটি ফর হেরিটেজ অ্যান্ড ইকোলজিক্যাল রিসার্চেস) এর সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ কুণ্ডু বলেন, ”পাহাড়ে উন্নয়ন করতে গিয়ে আসলে সেখানকার পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। এতে পাহাড়ে বন্যপ্রাণীদের জীবন বিপন্ন। তবে সবথেকে চিন্তা রয়েছে দার্জিলিংয়ের স্নো-লেপার্ডদের নিয়ে। এরা উষ্ণ এলাকায় থাকতে পারে না। পাহাড়ি শীতল এলাকা হল এদের সুরক্ষিত বাসস্থান। পাহাড়ে জলবায়ু পরিবর্তনে এদেরও বাসস্থানের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু অন্য বন্যপ্রাণীদের মতো এদের সমতলে কোনও সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে রাখা যাবে না। সেক্ষেত্রে অনেকটা খরচসাপেক্ষ হয়ে যাবে।”

রাজ্য জু’অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি সৌরভ চৌধুরী বলেন, ”তোবগেদাঁড়াতে স্নো লেপার্ডের সংরক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। পাহাড়ে ধস নামলেও সেটি সুরক্ষিত রয়েছে। সেখানে কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে এটা ঠিক, সুরক্ষার কথা ভেবে বা কোনও বড় বিপর্যয় হলে স্নো-লেপার্ডদের সমতলে নিয়ে এসে রাখা সম্ভবপর নয়।” তিনি আরও জানান, ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে স্নো-লেপার্ডদের রাখতে হয়। পরিবেশবিদ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর কথায়,”পর্যটন ব্যবসার জন্য যেভাবে উত্তরবঙ্গে পাহাড় বনাঞ্চল কেটে হোটেল, হোম স্টে গড়ে তোলা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। পাহাড়ের পরিবেশের ক্ষতি করা হচ্ছে।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button