আন্তর্জাতিক

মেশিনে কুড়িটা খালি বোতল ঢুকালে বেরিয়ে আসে এক ডলার

মাইন উদ্দিন আহমেদ, নিউ ইয়র্ক থেকেঃ

মেশিনে কুড়িটা খালি বোতল ঢুকালে বেরিয়ে আসে এক ডলার

এই নগরীতে রাস্তায় বা রাস্তার পাশে, কোথাও কোন প্লাস্টিক বা কাঁচের বোতল অথবা মেটাল ক্যান পড়ে থাকতে দেখা যাবেনা। কারণ এখানে কেউ পানীয়ের বোতল যত্রতত্র ছুঁড়ে মারেনা। এমনকি আপনি একটু আগে পথিপার্শ্বস্থ ময়লার ঝুড়িতে যে বোতলটি ফেলেছিলেন, এখন গেলে সেটিও পাবেননা। কারণ কি? সেটাইতো নিউজ। ব্যতিক্রমী সংবাদ।

উল্লিখিত কথাগুলোর অকুস্হল হচ্ছে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক স্টেইট। এখানে কেউ রাস্তায় পানীয়বোতল ফেলেনা। ময়লার ঝুড়িতে ফেলে যেটা আবার একটু পরেই গায়েব হয়ে যায়। রহস্য কি? কোন ভৌতিক ব্যপার? না, মোটেই নয়। এটি একটি বিধিবদ্ধ নিয়মের হাঁ-সূচক পরিনতি। তাহলে এবার আসল কথাটি বলা যাক। নিয়মনীতি মানুষকে দিয়ে মানানোর জন্যযে বুদ্ধিসঞ্জাত পদ্ধতির প্রয়োজন হয়, এটি তার প্রমান।
নিউ ইয়র্কে কেউ দোকান থেকে পানীয় কিনলে যে দাম নেয়া হয় তাতে পাঁচ সেন্ট থাকে বোতলের দাম। আপনি বোতলটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় ফেরত দিলে সরকার আপনাকে পাঁচ সেন্ট ফেরত দেবে। কুড়িটা বোতল মেশিনে ঢুকালে পাবেন এক ডলার। এই হারে চলতেই থাকবে।

তাহলে প্রত্যেকে কোমল পানীয় পান করার পর কি ঐ বোতলটি নিয়ে আবার দোকানে চলে যায়? না, তা যায়না। ক্রেতা এটি যে কোন ময়লার ঝুড়িতেই ফেলেন। গরীব মানুষ এটি কুড়িয়ে নিয়ে যায়। অনেক বোতল একত্র হলে ট্রলি বা বস্তায় ভরে এক বিশেষ স্হানে সেগুলো নিয়ে যায়। এক রকমের মেশিনে বোতল ঢুকিয়ে দিলে মেশিন বোতল গুণে গুণে সংখ্যা অনুযায়ী দাম উগরে দেয়। এটি নিউ ইয়র্কে সুপ্রতিষ্ঠিত একটি সিস্টেম। তাই বোতল সংগ্রহকারীদের এক অলিখিত প্রতিযোগিতা চলতে থাকে।

তবে কানে কানে একটা কথা বলে রাখা ভালো যে, শুধু গরীব মানুষেরা নয়, অবস্হাসম্পন্ন লোককেও একাজ করতে দেখা যায়।

এই প্রতিবেদক একদিন দেখলেন, এক লোক তাঁর প্রাইভেট কার থেকে নেমে গাড়ীর পেছনের ডালা খুলে একটা বড় পলিব্যাগ বের করে সেই রকম একটি মেশিনের কাছে গিয়ে বোতল ভরতে শুরু করেছেন। বিজ্ঞজন বলেন, মানুষ নিয়ম তৈরী করে আবার নিয়মও মানুষ গড়ে তোলে!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button