কাবুল বিমানবন্দরে এক বোতল পানি ৩৫০০ টাকা
তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন হওয়ার পর ১০ দিন পার হয়েছে। সারাদেশের আফগানদের জীবনযাত্রাও অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। কিন্তু কাবুল বিমানবন্দরের হুড়োহুড়ি, ভিড়সহ অরাজক পরিস্থিতি যেন আগের অবস্থাতেই রয়েছে। ১০ দিনেও কমেনি একটুও।
এই পরিস্থিতিতে কাবুল বিমানবন্দরের করুণ ছবি উঠে এসেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। বিমানবন্দরের চারদিকে কেবলই আশাহীন মানুষের ছোটাছুটি। রোদ-গরমে ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত মানুষ রয়েছেন বিরামহীন অপেক্ষায়। মানুষের আস্থা-ভরসাও ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন অনেকেই।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে, কাবুল বিমানবন্দরের আশপাশে এক বোতল পানি বিক্রি হচ্ছে ৪০ মার্কিন ডলারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া এক প্লেট ভাতের মূল্যও চাওয়া হচ্ছে ১০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৮ হাজার ৫০০ টাকারও বেশি।
খাবার ও পানির উচ্চ মূল্যে কার্যত দিশেহারা বিমানবন্দরে অপেক্ষারত মানুষেরা। এক আফগান নাগরিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট’কে জানিয়েছেন, তিনি এক বোতল পানি কিনেছেন যার দাম পড়েছে ৪০ মার্কিন ডলারের মতো।
ফজল-উর-রেহমান নামে এক ব্যক্তি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘কাবুল বিমানবন্দরে এখন এক বোতল পানি ৪০ মার্কিন ডলারে এবং এক প্লেট ভাত ১০০ মার্কিন ডলারে বিক্রি হচ্ছে। সেখানে আফগানি মুদ্রার বদলে কেবল মার্কিন ডলারে বেচাকেনা চলছে। এই উচ্চ মূল্যের কারণে সেখানে খাবার ও পনীয় এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।’
এদিকে কাবুল বিমানবন্দরে অবস্থানরত মার্কিন ও ব্রিটিশ নাগরিকদেরকে সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। একই সঙ্গে অন্যান্য স্থানে থাকা নাগরিকদের বিমানবন্দরের উদ্দেশে না আসতেও সতর্ক করে দিয়েছে দেশ দুটি।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে হুমকির কারণে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। বুধবার রাতে উভয় দেশ নিরাপত্তা সতর্কতা নিয়ে নির্দেশনাও জারি করেছে।
বুধবার এক নিরাপত্তা বিষয়ক সতর্কবার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যাবেই গেট, পূর্ব গেট এবং উত্তর গেটে অপেক্ষারত মানুষকে ‘অবিলম্বে সরে যেতে’ বলা হয়েছে।
এর আগে একই ধরনের পৃথক একটি নির্দেশনায় যুক্তরাজ্য সরকারও সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে এবং পরবর্তী নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করতে পরামর্শ দেয়। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ এবং যেকোনো সময় সেখানে সন্ত্রাসী হামলার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে।