২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদ বেগম আইভি রহমানের সমাধিতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ
রনজিত কুমার পাল (বাবু) স্টাফ রিপোর্টারঃ
২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদ বেগম আইভি রহমানের সমাধিতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ
২৪শে আগস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জননেতা জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী শহীদ বেগম আইভি রহমানের ১৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী।
২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তৎকালীন বিএনপি জামাত জোট সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বর্বোরচিত ভয়াবহ নৃশংস গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ৪ দিন মৃত্যুর সাথে লড়ে ২৪ আগস্ট রাত ২ টায় এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরলোকগমন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক জননেতা একেএম আফজালুর রহমান বাবু’র নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতৃবৃন্দ আজ ২৪ আগস্ট ২০২১ তারিখ সকাল সাড়ে ৯ টায় বনানী কবরস্থানে শহীদ বেগম আইভি রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জননেতা একেএম আফজালুর রহমান বাবু বলেন আইভি রহমানের পুরো নাম জেবুন্নেছা আইভি। ১৯৪৭ সালের ৭ জুলাই ভৈরব শহরের সম্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন।১৯৫৮ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জননেতা জিল্লুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিবাহের একজন সাক্ষী ছিলেন।
তাঁর বড়বোন শামসুন্নাহার সিদ্দিকা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার শাশুড়ী। বঙ্গবন্ধু পরিবারের নিকটাত্মীয় বেগম আইভি রহমান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৫ সালে মহিলা আওয়ামী লীগ এর সদস্য হন।১৯৮০ সালে মহিলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি নির্বাচিত হন। স্বাধীনতা সংগ্রাম সহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সন্মুখ সারিতে থেকে অসীম সাহসীকতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ঘাতকের নির্মম গ্রেনেড হামলায় শাহাদাত বরণ করেন তিনি।
স্বাধীনতার পরাজিত শত্রু ১৫ আগস্ট ও ২১ শে আগস্টের খুনিরা এক ও অভিন্ন। ঘাতকচক্র সবসময় রক্তপাত ঘটাতে ষড়যন্ত্র করতে থাকে! রক্ত পিপাসু হায়েনার চোবল থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে তাদেরকে চিরতরে নির্মূল করতে হবে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি চক্রের সকল প্রকার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। যেকোন মূল্যে দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার চলার পথকে মসৃণ করতে সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রশ্নে যেকোন ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বিএনপি জামাত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ সহায়তায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বর্বোরচিত নৃশংস গ্রেনেড হামলায় রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত গুরতর আহত বেগম আইভি রহমানকে ঢাকা মেডিকেল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে নিতে বাঁধা দিয়েছিল কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা। সরকারের নির্দেশে মুহুর্তের মধ্যে আলামত ধ্বংস করে ফেলেছিলো তারা। চিকিৎসার জন্য বেগম আইভি রহমানকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও চিকিৎসায় বিলম্ব করা হয় উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে।
২ দিন জননেতা জিল্লুর রহমান সাহেবকে দেখতে দেয়া হয়নি তার সারাজীবনের সঙ্গী মৃত্যু পথযাত্রী মুমূর্ষু প্রিয়তমা স্ত্রীকে! অমানবিক নিষ্ঠুর আচরণ করেছিলো তৎকালীন খালেদা নিজামী জোট সরকার। তৎকালীন জোট সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় জজমিয়া নাটক মঞ্চস্থ করে ২১ শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছিলো। খুনিদের আড়াল করার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু সত্য কোনদিন চাপা থাকে না! সত্য ঠিকই উদঘাটিত হয়েছে। ২১ শে আগস্টের খুনিরা চিহ্নিত হয়েছে! তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুনিদের বিচারের দন্ড কার্যকরের দাবি করেন।
২১ শে আগস্টের ঘটনার নেপথ্য কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন। মুক্তিযুদ্ধও সমাজসেবায় অনন্য ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার জন্য ২০০৯ সালে শহীদ বেগম আইভি রহমানকে মরনোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। তিনি মাননীয় সংসদ সদস্য জননেতা নাজমুল হাসান পাপন দুই কন্যা তানিয়া ও ময়নার গর্বিত জননী। নির্ভীক অসীম সাহসী শহীদ বেগম আইভি রহমানের রক্তের ঋন শোধ হবার নয়। জাতি তাঁর অবদান বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, ম আব্দুর রাজ্জাক, দেবাশীষ বিশ্বাস, ফারুক আমজাদ খান ড. জমির উদ্দিন শিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল সায়েম, আরিফুর রহমান টিটু, শাহজালাল মুকুল, গ্রন্থণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল সহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।