নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে তালেবান
রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের বেশিরভাগ অংশ তালেবানের দখলে চলে যাওয়ার পর থেকেই ভয় আর শঙ্কা দেখা দিয়েছে আফগানদের মধ্যে। বিশেষত নারী অধিকারের ক্ষেত্রে তালেবানের আগের কর্মকাণ্ড সেই শঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।বিরোধিতা করলে যে কোনো সময় খড়গ নেমে আসতে পারে গণমাধ্যমের ওপরও।
ক্ষমতা দখল করেই সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল টোলো নিউজে সাক্ষাতকার দিতে আসেন তালেবানের অন্যতম মুখপাত্র মৌলভি আবদুল হক হেমাদ। নারীর কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিয়ে আপত্তি জানানো তালেবান সবাইকে অবাক করে দিয়ে নারী উপস্থাপিকাকেই স্বাক্ষাৎকার দেয়।
নারী শিক্ষা, নারীর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ ও অধিকারের বিষয়ে বরাবরই তীব্র বিরোধী গোষ্ঠীটি অবশ্য বলছে, আফগান সংস্কৃতি ও শরীয়া মতে পূর্ণ অধিকার দেয়া হবে নারীকে। যদিও সেই অধিকার প্রদানের চেহারা কেমন হবে তা স্পষ্ট করেনি তালেবান। এরই মধ্যে গণমাধ্যমের খবর এসেছে, বহু নারীকে তাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে দেয়নি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। কাবুলের এক সংবাদ সংস্থার সম্পাদক জানিয়েছেন, তার নারী সহকর্মী সাংবাদিকদের ঘরে থেকে কাজ করারা নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তাই তালেবানের এসব অবশ্য প্রতিশ্রুতিতে খুব একটা আশ্বস্ত হতে পারছেন না কেউই। তাদেরই একজন আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় মিডিয়া গ্রুপ মোবি মিডিয়ার প্রধান সাদ মোহসেনি বলেন, ‘আমি মনে করি, বিরুদ্ধে গেলেই গণমাধ্যম স্রেফ বন্ধ করে দেবে তালেবান। আমি খুব একটা আশাবাদী নই গণমাধ্যমের ভবিষ্যত নিয়ে। শীর্ষ নেতারা এসেছে, পরিস্থিতি যে কোনো সময় পাল্টে যেতে পারে।’
মোহসেনি আরও বলছেন, সহকর্মীদের নিয়ে তিনি শঙ্কিত তিনি। গণমাধ্যম উগ্র এই সংগঠনটির সবচেয়ে বড় শত্রু। ক্ষমতায় একটু জেঁকে বসলেই এ মাধ্যম নিয়ে নীতি প্রকাশ করবে তারা। তখনই কেবল বোঝা যাবে তাদের আসল চেহারা।
আফগান সাংবাদিকদের আশঙ্কা, আসছে দিনগুলোতে তালেবানের কঠোর শাসন গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে চূড়ান্তভাবে খর্ব করবে। আগেরবার তালেবান শাসনের সময় যেখানে ছিল একটিমাত্র রেডিও স্টেশন। যা শুধুমাত্র আজান ও ধর্মীয় শিক্ষার কাজে ব্যবহৃত হতো। সেই আফগানিস্তানে এখন কয়েক ডজন টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি ১৭০টি রেডিও স্টেশন। আর সংবাদপত্রের সংখ্যা ১শরও বেশি।