রাজনীতি

ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার রাশেদ

বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের ‘সমন্বয়ক’ পদবি ব্যবহার করে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রাশেদ খানকে সংগঠন থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছেন ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি নুরুল হক নুর।

এতে চটেছেন রাশেদও। ‘সমন্বয়ক’ নামে সংগঠনে কোনো পদবি নেই দাবি করে নুরের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, জানতে চেয়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন তিনি।

রোববার ভোর ৩টার দিকে ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এসব বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন নুর ও রাশেদ।

এর আগে রাত একটায় নুর তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কমিটি বিলুপ্ত করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্র, যুব, শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের যৌথ আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সাথে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নতুন নেতৃত্ব বাছাই ও কমিটি গঠনে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।

কমিশনকে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নতুন নেতৃত্ব বাছাই ও কমিটি গঠনে নির্দেশনা প্রদান করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। কমিটি গঠনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবু হানিফকে।

এর তিন ঘণ্টা পর নুর আরেকটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক রাশেদ খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেন৷

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের এক যৌথ মিটিংয়ে সংগঠনের শৃঙ্খলাপরিপন্থি কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ’ এর আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেনকে সাময়িক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো।’

একই সঙ্গে কেন তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, তার কারণ দর্শাতে তদন্ত কমিটির কাছে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদানের অনুরোধ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে আব্দুজ জাহেরকে।

একই সময়ে পাল্টা একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন রাশেদ খান। এতে বলা হয়, ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের যেখানে কোনো ‘সমন্বয়ক’ পদবি নেই, সেখানে ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের ‘সমন্বয়ক’ নামে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করার ঘোষণা চরম অসাংগঠনিক কার্যকলাপ। এই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের ‘সমন্বয়ক’ পদবি ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, সে বিষয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হলো।

একই সঙ্গে ছাত্র অধিকার পরিষদের সব বিশ্ববিদ্যালয়-জেলা-মহানগর ও উপজেলা কমিটিকে বিভ্রান্ত না হয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বিজ্ঞপ্তিতে আহ্বান জানান রাশেদ।

এ বিষয়ে রাশেদ বলেন, ‘নুর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। একজন যুগ্ম আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করতে পারে না। আমি আহ্বায়ক। আমাকেও বহিষ্কার করার এখতিয়ার সে রাখে না। আমরাই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি অসাংগঠনিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করে আহ্বায়ককে বহিষ্কার করতে পারেন না।’

রাশেদ খান আরও বলেন, ‘আমরা জবাবদিহির মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে চাই। আর এ কারণেই তাকে (নুর) জবাবদিহির মধ্যে আনতে সাত দিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। সাত কর্মদিবসে নোটিশের জবাব না দিলে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

এ বিষয়ে নুরকে একধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button