আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প করোনা আক্রান্তদের কারাগারে বন্দি করতে চেয়েছিল

যুক্তরাষ্ট্রে যারা করোনা আক্রান্ত তাদেরকে সবার থেকে আলাদা রাখতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। গত বছর যখন সারাবিশ্বে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ছিল ঠিক তখনই এমন সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলেন তিনি।

 

ওয়াশিংটন পোস্টের দু’জন রিপোর্টারের লেখা একটি বইয়ে এমন দাবি করা হয়। ’দুঃস্বপ্নের দৃশ্যপট: ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরে মহামারির প্রতিক্রিয়া’ নামক বইটির লেখক ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক ইয়াসমিন আবুতালেব ও দামিয়ান পালেত্তা।

উক্ত বইটিতে উল্লেখ রয়েছে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র অন্যদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে চায়, কোন ধরনের ভাইরাস নয়। কারণ ট্রাম্প করোনাভাইরাসকে চায়না ভাইরাস মনে করতেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।

উল্লেখ্য, কিউবায় গুয়ানতানামো বে কারাগার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারাগার যা বন্দীদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত। এই কারাগারে বন্দীদের বিনাবিচারে আটক রাখা হয় এবং তথ্য আদায়ের লক্ষ্যে বন্দীদের ওপর যৌন অত্যাচারসহ আইনবহির্ভূত নানা নির্যাতন চালানো হয়ে থাকে। ৯/১১-এ যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর শত্রু যোদ্ধাদের আটক রাখতে ২০০২ সালের জানুয়ারিতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এ কারাগার চালু করেন। ১৯০৩ সালের হাভানা চুক্তির আওতায় কিউবা থেকে ইজারা নিয়ে কারাগারটি তৈরি করা হয়।

ডোনাল্ট ট্রাম্পের সময়ে করোনায় নাজুক ছিল গোটা যুক্তরাষ্ট্র। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বলছে, মহামারিতে দেশটিতে মোট ৬ লাখ মানুষ প্রাণ হারান। যার মধ্যে ৪ লাখের মৃত্যু হয় ট্রাম্পের আমলে।ট্রাম্পের কিছু শীর্ষ উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্যগুলো বইটিতে তুলে ধরেন ওয়াশিংটন পোস্টের দুই প্রতিবেদক। যেখানে তারা উল্লেখ করেন, ট্রাম্প্র শুরুতে নিজের করোনা পরীক্ষা করতে রাজি ছিলেন না। কারণ ট্রাম্পের ধারণা ছিল তিনি কোভিড-১৯ পজেটিভ হলে আসন্ন নির্বাচনে হেরে যেতে পারেন তিনি।

এছাড়া করোনাকালে হোয়াইট হাউসের আমলাদের সাথে ট্রাম্পের সম্পর্কের বিষয়টিও উঠে আসে বইটিতে। যেখানে দাবি করা হয়, হোয়াইট হাউজের চিকিৎসা বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা ড. অ্যান্থনি ফাউচির সাথেও ট্রাম্পের সম্পর্ক ভালো ছিল না। মহামারির সময়ও ডোনাল্ড ট্রাম্প চিকিৎসকদের চেয়ে অর্থনীতিবিদের বেশি পাধান্য দিতেন।

ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কুইন্সে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি শপথ নিয়েছিলেন ট্রাম্প।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button