মেহেদীর রং না শুকাতেই যৌতুকের তাড়নায় নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বামীর ঘর ছাড়তে হয়েছে আয়েশাকে
দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি-(সুনামগঞ্জ)
মেহেদীর রং না শুকাতেই যৌতুকের তাড়নায় নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বামীর ঘর ছাড়তে হয়েছে আয়েশাকে
যৌতুক নামের পাষাণ ব্যাধি কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে আয়েশাদের। এমনই একটা ঘটনার সূত্র সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের করালী গ্রামের অজ পাড়া গাঁয়ে। গত ১২ এপ্রিল ২০২১ ইং উপজেলার করালী গ্রামের আহাদ আলীর মেয়ে আয়েশা বেগমের সঙ্গে একই গ্রামের
জমসিদ আলীর ছেলে মঈনুল ইসলামের বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় যৌতুকের দাবি না থাকলেও মেহেদীর রং না শুকাতে বিয়ের ২২ দিনের মাথায় যৌতুকের তাড়নায় নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বামীর ঘর ছাড়তে হয়েছে আয়েশাকে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৪ মে ২০২১ দিবাগত রাত আয়েশার শশুর জমসিদ আলীর চাহিদা অনুযায়ী বাবার বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন আয়েশার স্বামী মঈনুল ও তার পরিবার। অসহায় পিতার কাছে ১ লাখ টাকা নেই। এমন কথা বলার সাথে সাথে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে গুরুতর আহত করা হয় আয়েশাকে। শুধু তাই নয়, শশুর জমসিদ আলী এগিয়ে এসে তার ছেলে মঈনুলকে বলে তর বউকে তালাক দিলে আরও ভালো জায়গায় বিয়ে করাতে পারব। নগদ টাকাও পাওয়া যাবে। এভাবে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে ঘর থেকে বের করে দেয় আয়শাকে। সে নিরুপায় হয়ে অসহায় বাবার বাড়ি আশ্রয় নেয়।।
গত ১৯/০৫/২০২১ ইং সুনামগঞ্জ নারীও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে মঈনুল ইসলাম ও তার পিতা জমসিদ আলী দুজনকে আসামী করে আয়েশা বাদি হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলার কথা শুনে জমসিদ আলী তার ছেলে মঈনুলকে লুকিয়ে রাখছে।
বিষয় জানতে চাইলে আয়েশার বৃদ্ধ দাদা উমর আলী জানান, জমসিদ আলী আমার পরিবারের লোকজন কে রাস্তা ঘাটে চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
মামলার ২ নং আসামী ও ছেলের বাবা জমসিদ আলী বলেন, আমার ছেলে বাড়িতে নেই, যত টাকা খরচ হওয়ার হউক আমি এই মেয়েকে বাড়ির বউ হিসাবে মেনে নিব না। প্রয়োজন ৩০/৪০ হাজার টাকা দিয়ে সালিশের মাধ্যমে আপোষ করে নিব।
অসহায় দিনমজুর পরিবারের মাতৃহীন আয়েশা তার সাথে ঘটে যাওয়া কথা গুলো এভাবেই জানান, আমার মা নেই, আমার বাবা একজন অসহায় দিনমজুর যৌতুকের টাকা দেওয়া সম্ভব নয়, তাই আমার বিয়েটাই অভিশাপ। ২২ দিনের মাথায় স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে মানবতর জীবন কাটাচ্ছি। আমার শশুর বাড়ির লোকজন রাস্তা ঘাটে আমাদের আক্রমণ করে। আমি ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় আছি।
এব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নাজির আলম বলেন, আদালতের কপি এখনও থানায় আসেনি। মামলার কপি পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।