চট্টগ্রামকে অবিলম্বে রেডজোন ঘোষনা করে কারফিউ জারীর দাবী: চট্টগ্রাম বিএনপি।
এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি-ঃ
চট্টগ্রামকে অবিলম্বে রেডজোন ঘোষনা করে কারফিউ জারীর দাবী: চট্টগ্রাম বিএনপি।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমন সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে ভয়াবহ রুপ নেওয়ায় অবিলম্বে চট্টগ্রামকে “রেড জোন” ঘোষনা করে নুন্যতম একমাস কারফিউ জারী করার আহবান জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিএনপি।
আজ ৭ জুন, রবিবার চট্টগ্রামের কাজীর দেউরীর নাসিমন ভবনস্থ চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবী তুলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে ডা: শাহাদত বলেন-প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস এখন এক বৈশ্বিক আতঙ্কের নাম। এ ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রামে দিন দিন করোনা সংক্রমিত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে যে তথ্য জনগন জানতে পারে বাস্তব চিত্র অনেক ভয়ঙ্কর। প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছে। নগরীরর বিভিন্ন মসজিদের মাইকের আওয়াজে ভেসে আসছে শোক আর বেদনার মৃত্যু সংবাদ, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের ক্ষেত্রে বর্তমানে রাজধানী ঢাকার পরে চট্টগ্রামের অবস্থান। বাংলাদেশ এখন সংক্রমনের দিক দিয়ে শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় ঢুকে পড়েছে।
দেশের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু এই বন্দর নগরীতে প্রায় ৬০ লক্ষ নাগরিকের বসবাস। বর্তমানে করোনার ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের কারণে এই শহরের সাধারণ জনগণ অত্যন্ত স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সরকারিভাবে ৩টি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা ও পরীক্ষা করলেও বিশাল জনগোষ্ঠির তুলনায় এই আয়োজন অত্যন্ত অপ্রতুল। করোনা রোগীর জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত আইসিইউ শয্যা, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ভ্যান্টিলেটরের ব্যবস্থা নেই। চিকিৎসার জন্য মানুষ এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটছে। কিন্তু প্রত্যাশিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা। চিকিৎসার অভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে। চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে এখন মৃত্যু আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ অবস্থায় চট্টগ্রামের গুরুত্ব বিবেচনা করে করোনা রোগীর পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধির মাধ্যমে গণসচেতনতা বৃদ্ধ করে অসহায় মানুষের খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করে অবিলম্বে চট্টগ্রামকে “রেড জোন” ঘোষনাপুর্বক নুন্যতম একমাস কারফিউ জারী করার আহবান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর বলেন- লকডাউনসহ বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির যখন উন্নতি ঘটছে তখন আমাদের দেশে ভয়াবহ আকারে অবনতি হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু সর্বোচ্চ পর্যায়ে। হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে কাতরাচ্ছে করোনা রোগীরা এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। টেস্টের অনুপাতে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার সব দেশকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে সীমাহীন ব্যর্থতার কারণে পরিস্থিতি দিনদিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
তিনি বলেন, সরকারের মধ্যে সমন্বয়হীনতা মানুষের জীবনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। অনির্বাচিত সরকারের কাছে জনগণের জীবনের কোন মূল্য নেই। অবিবেচকের মতো সবকিছু খুলে দিয়ে এখন তামাশা দেখছে সরকার। প্রতিদিন সরকারীভাবে করোনা আক্রান্তের যে সংখ্যা জানানো হচ্ছে প্রকৃত সংখ্যা তারচেয়েও অনেক বেশী। অনেক মানুষ আক্রান্ত হলেও গণনার বাইরে রয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এস.এম. সাইফুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম, সহ-দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী প্রমুখ।