আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন আবদুল কাদের মির্জা
মোঃ ফখর উদ্দিন,নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন আবদুল কাদের মির্জা
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে এবং লাইভে এসে বুধবার তিনি এই ঘোষণা দেন।২৭ বছর ধরে এ পদে ছিলেন তিনি।
লাইভে বলেন, ‘অতীতে যে প্রতিশ্রুতিগুলো দিয়েছি তা রক্ষা করে আমি বিদায় নিতে চাই। আমি আর প্রশ্নবিদ্ধ হতে চাই না। আমি যে দল থেকে বিদায় নিচ্ছি। এতদিন আওয়ামী লীগের মির্জা ছিলাম। আওয়ামী লীগের মির্জা আজ থেকে আমি নেই। কোনো শক্তি আমাকে আর আওয়ামী লীগের মির্জা বানাতে পারবে না।’
বুধবার ফেসবুকে পোস্টে পদত্যাগের ঘোষণা দেন কাদের মির্জা তবে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিকে দূর থেকে সহযোগিতা করবেন বলে জানান। নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনাম চৌধুরী সেলিম জানান, কাদের মির্জা দল থেকে পদত্যাগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগকে লিখিত বা মৌখিক কোনো ভাবেই জানাননি।
ফেসবুকে পদত্যাগের ঘোষণা এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। সর্বশেষ বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তিনি প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়ে পদত্যাগ করেন। বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনের আগে দলের নেতাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন মেয়র কাদের মির্জা।
শুরুতে কারও নাম উল্লেখ না করলেও পরে তিনি জানান, তার এসব বক্তব্য নোয়াখালী আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে।পরে স্পষ্ট হয়ে ওঠে এমপি নিজাম ও একরাম চৌধুরীর সঙ্গে কাদের মির্জার বিরোধ। এসবের মধ্যে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল ও কাদের মির্জা গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হন স্থানীয় সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির।
সাংবাদিক হত্যা ও দলের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে ২৪ জানুয়ারি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে জেলা আওয়ামী লীগ। গত ৯ মার্চ বিকেলে বসুরহাট পৌরসভার রূপালী চত্বরে মেয়র কাদের মির্জা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীদের সংষর্ঘ হয়।
এতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিসহ আহত হন অন্তত ২৫ জন। ওই রাতে পৌরভবন এলাকায় দুই পক্ষে গোলাগুলি হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হন ১৪ জন। মারা যান শ্রমিক লীগ নেতা মো. আলাউদ্দিন। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা হয়। মেয়র কাদের মির্জার অনুসারীদের পক্ষ থেকে মিজানুর রহমান বাদলকে প্রধান আসামি করে করা হয় দুটি মামলা।
গত ১১ মার্চ নোয়াখালী প্রেসক্লাব এলাকা থেকে বাদলকে আটকের পর বিস্ফোরক আইন ও প্রতিপক্ষের ওপর হামলা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পুলিশের ওপর হামলার মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মঙ্গলবার(২৩ মার্চ)ওই তিন মামলায় জামিনে মুক্ত হন মিজানুর রহমান বাদল। এরপর কোম্পানীগঞ্জে শুরু হয় কাদের মির্জা ও বাদল গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও বক্তব্য।