তাহিরপুরে সাংবাদিক কামাল হোসেনকে গাছের সাথে বেধে মারধর।
আব্দুছ ছালাম শাকিল, জেলা প্রতিনিধি-(সুনামগঞ্জ)
তাহিরপুরে সাংবাদিক কামাল হোসেনকে গাছের সাথে বেধে মারধর।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত অপরুপ সৌন্দয্যের লীলাভূমি পর্যটক এলাকা হিসেবে খ্যাত যাদুকাটা নদীতে স্থানীয় কিছু ভূমিখেকো চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে পাড় কেটে লক্ষ লক্ষ বালু ও পাথর উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে।
এই বালু কাটার দৃশ্য ধারন করতে ছবি তুলতে গেলে তাহিরপুরে স্থানীয় এক সাংবাদিককে গাছের সাথে বেঁধে বেদড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে একটি প্রভাবশালী ভূমি লুটপাঠকারী চক্র।
তারা রাতারাতি যাদুকাটা নদীতে ও পাড় কেটে অল্পদিনে লাখপতি হলেও দেখার যেন কেহ নেই। এই চক্রটি সাংবাদিককে প্রথমে মারধরের পর তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।
এমন দৃশ্য হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজা নিজের ফেসবুক আইডিতে এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করে। এই ঘটনায় যে বা যারাই জড়িত রয়েছেন তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য পুলিশ প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, তাহিরপুরের জাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে পাড় কেটে বালু-পাথর উত্তোলন করছিল স্থানীয় একটি প্রভাবশালী ভূমিখেকো চক্র। এমন সংবাদ পেয়ে সোমবার (১ ফেব্রুয়ারী) সকালে দৈনিক সংবাদ ও দৈনিক শুভ প্রতিদিনের তাহিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি কামাল হোসেন পাড় কেটে বালু-পাথর উত্তোলনের ছবি তুলতে যান।
ছবি তুলতে দেখে পাথর কাটার সঙ্গে জড়িত সকল ভূমিখেকোরা তাকে আটক করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং বেদড়ক মারপিঠ শুরু করেন এবং পরবর্তীতে ঘাগটিয়া চকবাজারে নিয়ে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে শরীরের কাপড়চোপড় ছিড়ে পেলে লাঠিসোটা দিয়ে ঐ সাংবাদিকদের শরীরের বিভিন্ন অংশে আগাত করতে থাকে। এত পর্যায়ে তাকে পিঠিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে দেয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মারধরের পর সাংবাদিক কামাল হোসেনকে গাছের সঙ্গে হাত পা বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে।
তার মুখমন্ডল ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন। চারপাশ ঘিরে রেখেছে হামলাকারীরা । একপর্যায়ে তার বাঁধন খুলে দেয়া হয়। তবে হামলাকারীদের বিস্তারিত পরিচয় জানা না গেলেও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা একটু অনুসন্ধানে নামলেই এই হামলার ঘটনার সাথে কারা জড়িত তা উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা জাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে পাড় কেটে বালু-পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। তাদের অভিযোগ, চক্রটির কারণে জাদুকাটা নদী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
পরে স্থানীয় বাসিন্দা জিয়ারুল হক ঐ সাংবাদিককে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে নিয়ে ভর্তি করেন।
হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশমির রেজা জানান, ‘এক সাংবাদিক জাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে পাড় কেটে বালু-পাথর উত্তোলন করার ছবি তুলতে যান। তাকে ছবি তুলতে দেখে প্রকাশ্যে পাথরখেকোরা গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। এই ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবী জানান।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’