করোনা ভ্যাকসিন দেশেই বানানো সম্ভব, জাফরুল্লাহ।
বর্তমান সময়ে বাজারে যতগুলো করোনা ভ্যাকসিন রয়েছে তার সবগুলোই আমরা ছয় মাসের মধ্যে তৈরি করতে পারি বলে মনে করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কর্তৃক বাংলাদেশে নতুন অনন্য সার্স কোভ -২ ভেরিয়েন্টে শনাক্ত বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, একটা অনুরোধ করছি সরকারকে শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের দিকে নজর না দিয়ে গবেষণার দিকে নজর দিন। গবেষণার দিকে নজর দিলে করোনাভাইরাস বিষয়ে ব্যাপক আকারে গবেষণা করা যাবে। বাংলাদেশের তরুণ গবেষকরা যতগুলো ভ্যাকসিনের নাম শুনেছেন বাংলাদেশে ছয় মাসের মধ্যে সবগুলো তৈরি করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ৪৩ বিলিয়ন ডলার মজুদ রয়েছে। একটা অত্যন্ত ভালো খবর। এই টাকা যেন ব্যবসায়ীরা খেয়ে না ফেলে। সেই জন্য প্রতিবার সরকারকে অনুরোধ করছি মাত্র হাফ বিলিয়ন ডলার, জনপ্রতি মাত্র ৩ ডলার সরকার গবেষণার জন্য বিনিয়োগ করুক। আমাদের প্রতিটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে পারবে। তাদেরকে গবেষণার সুযোগটা করে দিতে হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটা মানুষের মঙ্গলার্থে এই গবেষণা করা প্রয়োজন। এই জন্য আমরা বলছি কোয়ার্টার বিলিয়ন গবেষণার কাজে, বাকি কোয়াটার ভ্যাকসিন উৎপাদনে ব্যয় করা হবে। বিদেশ থেকেও আমরা গবেষক আনতে পারি। বর্তমান সময়ে বাজারে যতগুলো ভ্যাকসিন রয়েছে তার সবগুলোই আমরা ছয় মাসে তৈরি করতে পারি।
গণস্বাস্থ কেন্দ্র সমমনা প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে কোভিড-১৯ সংগ্রামে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। গণস্বাস্থ্য-আরএনএ মলিকুলার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের দক্ষ গবেষকরা প্রাপ্ত ক্লিনিকাল নমুনা থেকে সার্স কোভ -২ ভেরিয়েন্টের সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স করেছেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য সামাজিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান ডা. অধ্যাপক মামুন মোস্তাফী, মাইক্রোবায়োলজী বিভাগীয় প্রধান ড. মাহবুবুর রহমান, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রায়েদ জমিরউদ্দিন, বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডক্টর নীহাদ আদনান, গণস্বাস্থ্যের করোনা কিটের সমন্বয়ক এবং মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার, গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে আইসিইউ প্রধান অধ্যাপক নজিব মোহাম্মদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।
মতবিনিময় সভায় গবেষকরা বলেন, বাংলাদেশে দক্ষিণ আফ্রিকার করোনাভাইরাস সদৃশ্য (ই৪৮৪কে) মিউটেশন পাওয়া গিয়েছে। মিউটেশন যেকোনো ভাইরাসের সাধারণ একটি বৈশিষ্ট্য। ভাইরাস প্রতিনিয়ত এর বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে। করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করবে।
গবেষকরা আরও জানান, সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনেশন অতি দ্রুত শেষ করার। যত দ্রুত আমরা জনগণকে টিকা দিতে পারব তত তাড়াতাড়ি কোভিড-১৯ জনিত রোগ ছড়িয়ে পড়া বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে করোনার মারাত্মক কোনো মিউটেশনের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারব।