করোনার ভুল তথ্য দেয়ায় হোয়াইট হাউজে অভিযুক্ত ফেসবুক-ইউটিউব
বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ টিকাদান প্রক্রিয়া নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর দায়ে ফেসবুক ও ইউটিউবকে দায়ী করেছে হোয়াইট হাউজ। হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা মনে করেন কভিড-১৯ টিকা ও টিকাদান প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগজনক পরিমাণে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় ফেসবুক ও ইউটিউবের দায় আছে। প্লাটফর্ম দুটি এসব ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া রোধ করার ব্যাপারে যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। হোয়াইট হাউজ প্রশাসনের এক সূত্র এমনটা জানিয়েছে। খবর রয়টার্স।
এর আগে কভিড-১৯ টিকাদান প্রক্রিয়া নিয়ে ফেসবুকসহ অন্যান্য প্রযুক্তি প্লাটফর্মগুলোকে খুনি আখ্যায়িত করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এর আগ পর্যন্ত ভুল তথ্য ছড়ানোর দায়ে তার সুর অনেকটাই নরম ছিল। এ ঘটনার পর পরই ভুল তথ্য ছড়ানো নিয়ে নড়েচড়ে বসে হোয়াইট হাউজ।
হোয়াইট হাউজের একজন জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, প্রধান সমস্যা হলো ইউটিউব ও ফেসবুকের অসংগতিপূর্ণ ভুল তথ্য নির্ধারণ নীতিমালা। গুগলের অন্যতম পণ্য ইউটিউব এবং সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুক তাদের প্লাটফর্মে কভিড-১৯ নিয়ে কী ধরনের তথ্য ভুল তথ্য হিসেবে পরিগণিত হবে, তা নিয়ে নিজস্ব মত পোষণ করে। তাদের এসব মতের ফলে যেসব তথ্য সাইবার জগতে ছড়িয়ে পড়ছে তা নিয়ে অসন্তুষ্ট হোয়াইট হাউজ কর্তৃপক্ষ।
হোয়াইট হাউজের আরেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, ফেসবুক ও ইউটিউব বর্তমানে বিচারকের ভূমিকা পালন করছে। এসব বিচারক এবং আইনপ্রণেতারা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তাদের প্লাটফর্মে কী ধরনের বিষয়বস্তু প্রচার করা হবে। কভিড-১৯ নিয়ে প্লাটফর্ম দুটিতে ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় এমনভাবে জবাব দেন এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, তাদের নিজস্ব কর্মপদ্ধতি নিয়ে আরো উন্নতি করার বিষয় রয়েছে।
কভিড-১৯ টিকাদান প্রক্রিয়া নিয়ে বাইডেন প্রশাসন যেসব ভুল তথ্যের মোকাবেলা করছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো মানবদেহে কভিড-১৯ টিকার কোনো প্রভাব নেই। এসব টিকা দেয়ার সময় মানবদেহে ক্ষুদ্রাকৃতির মাইক্রোচিপ প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়, যাতে সরকার বা অন্য কেউ ব্যক্তির ওপর নজরদারি করতে পারে। কভিড-১৯ টিকা গ্রহণ করলে মহিলাদের গর্ভধারণ ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা এ ব্যাপারে জানান।
সম্প্রতি এসব কারণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও তার প্রেস সচিব জেন সাকি এবং সার্জন জেনারেল বিবেক মুর্থি এসব সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্টের ওপর ব্যাপক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা বলছেন, এসব ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্য মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই এবং জীবন রক্ষাকরণ প্রক্রিয়াকে কঠিন করে তুলছে।
সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজিটাল হেইটের (সিসিডিএইচ) এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র ১২টি ভ্যাকসিনেশন বিরোধী অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়িয়ে পড়া ভুল তথ্যের দুই-তৃতীয়াংশ সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব অ্যাকাউন্টের ছয়টি অ্যাকাউন্ট এখনো ইউটিউবে তাদের তৈরীকৃত ভুল তথ্য প্রচার করে যাচ্ছে। ফেসবুক ও ইউটিউবের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার সময় হোয়াইট হাউজ এ প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি প্রদান করেছিল।
হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তা বলেন, আমরা দেখতে চাই সব পক্ষই তাদের দিক থেকে যথেষ্ট পরিমাণ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে কভিড-১৯ নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো অতিদ্রুতই বন্ধ করা উচিত।